সোহরাব হোসেন।
কথামতো সোমবার আরামবাগের তৃণমূল পরিচালিত আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতে এসে ত্রাণের ত্রিপল চুরির তদন্ত শুরু করল ব্লক প্রশাসনের একটি দল। এ বিষয়ে অবশ্য তদন্তকারীরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরেজমিনে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ সরকারি ত্রিপল চুরির অভিযোগ উঠেছে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের একাংশই ব্লক প্রশাসনের কাছে ওই অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতেই এ দিন তদন্ত শুরু হয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দলীয় স্তরেও সোহরাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “প্রশাসন তাদের মতো তদন্ত করছে। দলীয় ভাবেও তদন্ত চলছে। ঠিক সময়ে ঠিক ব্যবস্থা নেবে দল।”
সোহরাব অবশ্য এ দিনও দাবি করেছেন, অভিযোগ মিথ্যা। তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপল নিয়ে কোনও অনিয়ম হয়নি। ব্লক প্রশাসন তদন্তে কোনও ত্রুটি পায়নি। ইয়াসে বৃষ্টির পরে কিছু ছেলে ত্রিপল নিতে এসেছিল। আমি তাদের বলি, আবেদন করলে পঞ্চায়েতের তরফে ক্ষতির বাস্তবতা খতিয়ে দেখে তবেই ত্রিপল দেওয়া হবে। এরপরই তারা দুর্নীতির কথা বলে গণ্ডগোল করে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার ইয়াসের পরে আরান্ডি পঞ্চায়েতে মোট ৯৫টি ত্রিপল বরাদ্দ হয়। প্রথম দফায় বৃহস্পতিবার পাঠানো হয় ৫৫টি ত্রিপল। শুক্রবার সকালে পঞ্চায়েতে গিয়ে ত্রিপল না পেয়ে স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ দেখান। পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ প্রধানের কাছে ত্রিপলের হিসাব এবং তা কোথায় আছে জানতে চান। একইসঙ্গে দাবি করেন, সংসদ ধরে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ত্রিপল ভাগ করে দেওয়া হোক। সদস্যেরাই নিজের এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের যাচাই করে, তাঁদের আবেদন নিয়ে ত্রিপল দেবেন। কিন্তু প্রধান ওই সব হিসেব দিতে আপত্তি করেন বলে অভিযোগ।
ব্লক প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা হিয়েছে, এ দিন তদন্তে পঞ্চায়েতের গুদাম থেকে মোট ৭২টি ত্রিপল মেলে। তবে, ‘বিদ্রোহী’ পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে শ্রীকান্ত ঘোষ এবং শেখ আসরাফুলের দাবি, প্রশাসন তদন্তের খবর আগাম জানিয়ে রাখায় প্রধান তাঁর নিজের ঘরে নিয়ে চলে যাওয়া সব ত্রিপল ফের গুদামে এনে রাখেন। তা-ও গত বছর আমপান এবং বর্ষার মরসুম মিলিয়ে যে ১০০টি ত্রিপল মজুত ছিল, সেগুলি ধরলেও হিসেব মিলছে না। শ্রীকান্ত গত পঞ্চায়েত বোর্ডে উপপ্রধান ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “শুধু ত্রিপল নিয়েই আমাদের অভিযোগ ছিল না। একই সঙ্গে পঞ্চায়েতে মজুত রাখা বেশ কিছু গাছের গুঁড়ি, লোহার রড, মার্বেল, পাথর ইত্যাদি নির্মাণ সরঞ্জামও উধাও হয়েছে। সে সব অভিযোগের কিনারা হয়নি। দল কী ভাবছে, এখন সেটাই দেখার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy