Advertisement
০১ মে ২০২৪
Death

স্কুল চত্বরে ঘরের সামনে খুন যুবতী

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ভোরে সৈকত কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের নজরদারিতে সে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

death

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

মা স্কুল শিক্ষিকা। সেই স্কুল চত্বরেই থাকতেন মা-মেয়ে। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টির মধ্যে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ মিলল খানিক তফাতে, স্কুলেরই পরিত্যক্ত একটি ঘরে। পান্ডুয়ার মহানাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ঘটনায় নিহতের নাম সৌমী গঙ্গোপাধ্যায় (২১)। তাঁর প্রেমিক সৈকত সরকার খুন করেছে বলে অভিযোগ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ভোরে সৈকত কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের নজরদারিতে সে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হুগলি গ্রামীণ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘নিহতের মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। সম্পর্কের টানাপড়েনে খুন বলে মনে হচ্ছে।’’ সৌমীর মা সুক্তিশুভ্রা মুখোপাধ্যায় পান্ডুয়া থানায় সৈকতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সৌমী মানকুন্ডুতে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গ্রাফিক্স অ্যানিমেশন নিয়ে পড়তেন। তবে, গত ৬-৭ মাস ধরে কলেজে যাচ্ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। বছর সাতাশের সৈকত মহানাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছেই কাকার বাড়িতে থাকে। গাড়ির গ্যারাজে কাজ করে। তার মা-বাবা থাকেন অসমে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সৌমীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন সুক্তিশুভ্রা। পুলিশ এসে সৌমীকে পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের অনুমান, ধারালো কিছু দিয়ে তাঁকে মারা হয়। পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন। বুধবার ইমামবাড়া হাসপাতালে সৌমীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।

সুক্তিশুভ্রা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টি হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে মেয়েকে না-দেখে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। তখনই ওই ঘরে ওকে পড়ে থাকতে দেখি।’’ স্কুলের পিছনের ওই জায়গায় কয়েকটি ঘর আছে, যেগুলি ব্যবহার করা হয় না। তার একটিতেই সৌমী পড়েছিলেন। সেটি সৌমীদের ঘর হাত পঞ্চাশেক তফাতে। খুনের ঘটনা নিয়ে প্রধান শিক্ষক সৌরভ দেবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ওই বিষয়ে কিছু জানি না।’’

সুক্তিশুভ্রার অভিযোগ, সৌমীকে প্রায়ই ফোন করত সৈকত। রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করত। স্কুলে তাঁদের ঘরের কাছেও চলে আসত। বহু বার বারণ করলেও শোনেননি। বিরক্ত হয়ে এক মাস আগে তিনি ঘরের সামনে সিসি ক্যামেরা লাগান। তিনি বলেন, ‘‘ওই ছেলেটাই মেয়েকে
খুন করেছে।’’ তিনি জানান, গত ২২ বছর ধরে তিনি মহানাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে ইতিহাস পড়াচ্ছেন। হৃদরোগজনিত কারণে ২০১৭ সালে তাঁর স্বামী মানস গঙ্গোপাধ্যায় মারা যান।

সৌমীর মৃত্যুর বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করে সৈকতের কাকা সলিল সরকার বলেন, ‘‘শুনেছি, ভাইপো ওই মেয়েটার সঙ্গে প্রেম করত। ভাইপো বিষ খেয়েছে। কেন খেয়েছে, জানি না। ভাইপো অসুস্থ। ওর সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Murder Pandua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE