E-Paper

হাওড়ায় অস্ত্র হাতে মিছিল, নির্দেশ উড়িয়ে বাজল ডিজেও

অতীতে শিবপুরের স্পর্শকাতর জায়গা দিয়ে রামনবমীর মিছিল যাওয়ার সময়ে একাধিক বার গোলমাল হওয়ায় এ বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন ও পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২৬
উত্তর হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলেও অস্ত্র হাতে দেখা যায় বহু মানুষকে। রবিবার।

উত্তর হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলেও অস্ত্র হাতে দেখা যায় বহু মানুষকে। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

হাওড়ার ২১টি জায়গা থেকে রবিবার রামনবমীর শোভাযাত্রা বেরোলেও কোথাও কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। হাওড়া শহরের যে দু’টি স্পর্শকাতর মিছিল নিয়ে পুলিশ তটস্থ ছিল, সেই দু’টিও এ দিন শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়। তবে এ দিন সকালে কাজিপাড়া ও বিকেলে দানেশ শেখ লেন থেকে বেরোনো ওই দু’টি শোভাযাত্রায় আদালতের নির্দেশ না মেনে ডিজে বাজানোর পাশাপাশি, আদালতের নির্দেশ মতো ৫০০ জনের অনেক বেশি মানুষকে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। যদিও আদালতের নির্দেশ মেনে এই রুটের মিছিলে কারও হাতে অস্ত্র ছিল না। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁরা ৫০০ জনকে নিয়েই মিছিল শুরু করেছিলেন। কিন্তু রাস্তায় লোকজন ওই মিছিলে যোগ দেওয়ায় সংখ্যাটি বেড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু করার ছিল না। তবে জিটি রোডের রুটে এই দু’টি মিছিল ছাড়া হাওড়ার অন্য মিছিলের ক্ষেত্রে অবশ্য অনেকের হাতেই অস্ত্র দেখা গিয়েছে।

অতীতে শিবপুরের স্পর্শকাতর জায়গা দিয়ে রামনবমীর মিছিল যাওয়ার সময়ে একাধিক বার গোলমাল হওয়ায় এ বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন ও পুলিশ। বিশেষত, কলকাতা হাই কোর্ট থেকে উদ্যোক্তারা একই রুটে মিছিল করার অনুমতি পাওয়ায় পুলিশ-প্রশাসন শিবপুরের জিটি রোডে ঢালাও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। শনিবার থেকে রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা হাওড়ায় চলে আসেন। মোতায়েন করা হয় তিন হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী। আগে থেকেই গ্রেফতার করা হয় এলাকার দুষ্কৃতীদের।

এ দিন সকালে দু’টি মিছিলের আগে কাজিপাড়া থেকে হাওড়া ময়দান— এই স্পর্শকাতর অংশটি পুলিশ বাহিনী দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি গলির মুখে ও রাস্তার পাশের বাড়িগুলির ছাদে মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। ১০টি ড্রোন উড়িয়ে আকাশপথেও চলে নজরদারি। অতিরিক্ত সিসি ক্যামেরা দিয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখেন রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা। পাশাপাশি, সাদা পোশাকে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারাও সর্বক্ষণ এলাকা ঘুরে নজরদারি চালান।

জিটি রোড দিয়ে এ দিন সকালে ও বিকেলে অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দু’টি মিছিল বেরোয়। সকালে বেলা ১১টায় অঞ্জনী পুত্র সেনার উদ্যোগে হওয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের আধার কার্ড দেখে তাঁদের একটি করে স্টিকার
দেওয়া হয়। পুলিশ থেকে জানানো হয়, ৫০০ জনের বেশি কেউ ওই মিছিলে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু মিছিল শুরু হওয়ার পরে দেখা যায়, যত মিছিল এগিয়েছে, ততই বেড়েছে লোকসংখ্যা।

তবে সব থেকে বেশি মানুষ অংশ নেন বিকেলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রায়। পুলিশের হিসাবে ওই মিছিলে তিন হাজারেরও বেশি লোক ছিল। আদালত শোভাযাত্রায় ডিজে বক্স বাজানো নিষিদ্ধ করলেও বর্ণাঢ্য ওই দুই মিছিলেই তীব্র শব্দে ডিজে বক্স বাজানো হয়েছে।

এই‌ দু’টি মিছিল ছাড়াও সকালে উত্তর হাওড়ায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আরও একটি শোভাযাত্রা বেরোয়। সেখানে উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীকেও হাঁটতে দেখা যায়। এ ছাড়া দুপুরে উত্তর হাওড়ার ডবসন রোড থেকে
বেরোনো খটিক সম্প্রদায়ের একটি মিছিলে অস্ত্র হাতে অনেককে দেখা গিয়েছে। তীব্র গরমে ওই মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের রাস্তাতেই শরবত, জল দিয়ে স্বাগত জানান এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ram Navami

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy