Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
cooking

LPG Cylinders: গ্যাস বাঁচানোর চেষ্টায় পাল্টে যাচ্ছে খাদ্যাভ্যাস

আরামবাগ শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিনতি রায়।

বিকল্প: গ্যাস সরিয়ে ইন্ডাকশন ওভেন আর কাঠের জ্বালানিতে উনুনে  চলছে রান্না। উলুবেড়িয়া ও পান্ডুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

বিকল্প: গ্যাস সরিয়ে ইন্ডাকশন ওভেন আর কাঠের জ্বালানিতে উনুনে চলছে রান্না। উলুবেড়িয়া ও পান্ডুয়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৫০
Share: Save:

দু’বেলা গরম ভাত-তরকারি খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছেন আ্যাম্বুল্যান্স-চালক মৃণাল শর্মা। সকালের জলখাবারে পরোটা-তরকারির বদলে এসেছে মুড়ি, পেঁয়াজ, ছোলাভাজা। গ্যাসের খরচ বাঁচছে।

আরামবাগের নবপল্লির ওই যুবকের কথায়, ‘‘এমনিতেই বাজার খারাপ। গাড়িটা নিজের। সারা মাসে ভাড়া খেটে গড়ে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। গাড়ির ঋণের কিস্তি আর মেরামতেই চলে যায় ১০-১২ হাজার টাকা। আমাদের মতো আয়ের মানুষদের দেড় মাস অন্তর প্রায় হাজার টাকায় রান্নার গ্যাস নেওয়া খুব চাপের। একটা সিলিন্ডার তিন মাসেরও বেশি চালাতে বরাবরের খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস তাই পাল্টে ফেললাম।’’

শুধু কি মৃণাল? গ্রাম-শহরের অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারকেও রাতের গরম ভাতের পাট চুকিয়ে দিতে হয়েছে। আরামবাগ শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিনতি রায়। তিনি বলেন, “রাতে নতুন করে রান্না একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি। গ্যাস বাঁচাতে ভাজাভুজি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। প্রেশার কুকার বেশি ব্যবহার করছি।”

আরামবাগের তারাল গ্রামের আশাকর্মী আবিদা খাতুনের একটি সিলিন্ডার আগে ১ মাস ১২ দিনের মতো চলত। এখন সেটাই তিনি তিন মাস চালাচ্ছেন। কী করে?

‘‘সকাল-সন্ধের টিফিন গ্যাসে করছি না। চা দিনে একবার করে ফ্লাস্কে ভরে রাখছি। দুপুরের ভাত ভিজিয়ে রেখে রাতে খাচ্ছি। টাকা জমিয়ে একটা ইন্ডাকশন কেনার চেষ্টা করছি।’’— বলছেন আবিদা। ভদ্রেশ্বরের মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা মুক্তা চট্টোপাধ্যায়ের খেদ, ‘‘টাটকা খাবার খাওয়া ভুলতে হচ্ছে। হয় মাইক্রোওভেনে খাবার গরম করতে হচ্ছে, না হলে পান্তা খেতে হচ্ছে। অবিলম্বে পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি চালু করা দরকার। তাতে মানুষের সুরাহা হবে।"

স্বামী অবসর নেওয়ায় উলুবেড়িয়ার প্রতিমা চক্রবর্তী এমনিতেই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এখন গ্যাসের দাম বাড়ায় বেশি ইন্ডাকশন ব্যবহার করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মাসে যদি প্রায় হাজার টাকার গ্যাস কিনতে হয়, তা হলে ওষুধ, ইলেকট্রিক বিল আর সংসার খরচ চালাব কী করে? তাই গ্যাস কম পোড়াচ্ছি।’’ একই রাস্তা ধরেছেন উলুবেড়িয়ার স্বরূপা মাইতিও। আবার প্রফুল্ল দাস নামে এক গৃহশিক্ষক বলেন, ‘‘করোনায় স্কুল বন্ধ। ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসছে না। রোজগার তলানিতে। গ্যাসের দাম আকাশছোঁয়া। স্ত্রীকে বলেছি বাগানের কাঠে রান্না করতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cooking alternative way-out
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE