Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Howrah

হাওড়ায় টাকা উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নামল ইডি

নগদ উদ্ধারের এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শৈলেশ পাণ্ডে এখনও নিখোঁজ। খোঁজ মেলেনি তাঁর দুই ভাই রোহিত এবং অরবিন্দেরও। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে লালবাজার জানিয়েছে।

উদ্ধার নগদ টাকা। —নিজস্ব চিত্র। ফাইল চিত্র।

উদ্ধার নগদ টাকা। —নিজস্ব চিত্র। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

হাওড়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়ি এবং গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-ও (ইডি)। মঙ্গলবার বিকেলে সিজিও কমপ্লেক্সে ‘কেস রেজিস্টার’ করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ইডি সূত্রের খবর। কলকাতা পুলিশের থেকে মামলার এফআইআর এবং প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট তলব করা হচ্ছে বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।

হাওড়ার শিবপুরে ওই ব্যবসায়ীর গাড়ি ও ফ্ল্যাট মিলিয়ে নগদে প্রায় আট কোটি টাকা উদ্ধার করেছেকলকাতা পুলিশ। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নরেন্দ্রপুর শাখার দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে ৭৭ কোটি টাকা লেনদেনের হদিস পায় পুলিশ। পরবর্তী তদন্তে আরও ১৭টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরখোঁজ মেলে। যার মধ্যে ছ’টি খতিয়ে দেখে নতুন করে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছিল কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি তদন্তকারী শাখা। বুধবার বাকি অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে আরও প্রায় ৭০ কোটি টাকার লেনদেনের হদিস মিলেছে বলে লালবাজার জানিয়েছে। সব মিলিয়ে এই টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০৭ কোটি টাকা লেনদেনের হদিস মিলল।

এত পরিমাণ টাকার লেনদেনের হদিস মিললেও পুলিশ শুধু নগদ আট কোটি এবং দু’টি অ্যাকাউন্টের ২০ কোটি টাকা ফ্রিজ় করেছে। তা হলে বাকি টাকা কোথায়? সেই ধোঁয়াশার উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

নগদ উদ্ধারের এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শৈলেশ পাণ্ডে এখনও নিখোঁজ। খোঁজ মেলেনি তাঁর দুই ভাই রোহিত এবং অরবিন্দেরও। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে লালবাজার জানিয়েছে। এই অনলাইন প্রতারণা-চক্রটি বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হত কি না, সেই সম্ভাবনাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তদন্তে নেমে এ বিষয়ে একাধিক তথ্য পেয়েছে লালবাজার। পুলিশ জেনেছে, এই অ্যাপের রক্ষণাবেক্ষণও বিদেশ থেকে হত। এমনকি, নেপাল থেকে বিভিন্ন জনকে ফোন করে অনলাইনে পাঠ নেওয়ায় উৎসাহিত করা হয়েছিল বলেও লালবাজার জেনেছে। এর সঙ্গে কালো টাকা সাদা করার চক্রের যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

প্রসঙ্গত, এক মাসে দু’টি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন দেখে সন্দেহ হওয়ায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে জানতে পারে, অনলাইনে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচা সংক্রান্ত পাঠ দেওয়ার নামে এই প্রতারণা-চক্র চালানো হত। তখনই পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডের নাম পান তাঁরা। অভিযুক্তের বাড়ি এবং গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নগদ কোটি কোটি টাকা এবং সোনার গয়না উদ্ধার করলেও পালিয়ে যান শৈলেশ। সিসি ক্যামেরাতেও ধরা পড়ে সেই ছবি।

পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল। কার্যত গোটাটাই হত অনলাইনে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘গোটা চক্রের পিছনে শৈলেশ ছাড়াও অন্য কেউ রয়েছেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁদের খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলছে। সে কাজে প্রযুক্তিরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah ED money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE