Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Dana

ঝড়ে ধানের সঙ্গে ক্ষতির আশঙ্কা আনাজেও

এ বার বর্ষার গোড়ায় ভাল বৃষ্টি মেলেনি। পরে সেই ঘাটতি পূরণ হয়েছে। তাই ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার মুখেই পাকা ধানে মই পড়ার শঙ্কা!

ফসলে ভরা জমি। গোঘাটে। নিজস্ব চিত্র

ফসলে ভরা জমি। গোঘাটে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১০:০৩
Share: Save:

শিস সবে পাকতে শুরু করেছে। জমি থেকে ধান তুলতে এখনও সপ্তাহ দুয়েক বাকি। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে চিন্তায় হুগলির চাষিরা। চিন্তা বাড়ছে আনাজেও।

পুজোর আগে প্রবল বৃষ্টি এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলে হুগলিতে আনাজ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। উৎসবের মরসুমে বাজার যথেষ্ট চড়া। সকলে অপেক্ষায় ছিলেন একটু ঠান্ডা পড়লে এবং শীতের আনাজ উঠলে বাজারে কিছুটা স্থিতাবস্থা আসবে। এই দুর্যোগ ফের আনাজের সর্বনাশ করলে আনাজের দাম কোথায় পৌছবে, এখন তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বার বর্ষার গোড়ায় ভাল বৃষ্টি মেলেনি। পরে সেই ঘাটতি পূরণ হয়েছে। তাই ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার মুখেই পাকা ধানে মই পড়ার শঙ্কা! তারকেশ্বরের রামনগরের অনুপ ঘোষ পাঁচ বিঘে জমিতে ধান ফলিয়েছেন। সব ঠিকঠাক থাকলে এই জমিতেই দিন কয়েক পরেই আলু বসাবেন বলে ঠিক করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ধানগাছের গোড়া এখন যথেষ্ট শুকনো। আশা করছি, ভাল পরিমাণ বৃষ্টি হলেও জমি জল টেনে নেবে। গাছের গোড়ায় বিশেষ জল বসবে না। ভয় ঝড় নিয়ে। ধানের শিস পাকতে শুরু করেছে। ঝড় হলেই শিস ঝরে পড়বে। ধান ঘরে তুলতে পারব না। এমন মোক্ষম সময় ঘূর্ণিঝড় এলে চাষির কিছুই করার নেই, শুধু দেখা ছাড়া।’’

চাষিদের অনেকেই বলছেন, জেলা কৃষি দফতর সতর্ক করলেও পরিস্থিতি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষেই অনুকূল নয়। ধনেখালির এক চাষি বলেন, ‘‘এ দিকে মাটিতে বালির ভাগ বেশি। তাই বৃষ্টি হলে জল টেনে নেওয়ার ক্ষমতা বেশি। কিন্তু ঝড় হলে ফসল বাঁচানোর আশা থাকবে না। সবই নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপরে।’’

ধান এবং আলুর পাশাপাশি সিঙ্গুর, নালিকুল, হরিপাল, ধনেখালি ইত্যাদি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আনাজ ভাল হয়। জমি থেকে জল সরতেই দুর্গাপুজোর মুখে শীতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলো, পালং শাক চাষ করেছিলেন চাষিরা। ধনেখালির কানানদী এলাকার প্রবীণ চাষি কাশীনাথ পাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বন্যায় ক্ষতি হওয়ায় আনাজ ফের নতুন করে বসাতে হয়েছে। আজ পর্যন্ত যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে সমস্যা ততটা নেই। আগামী দু’দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। লাগামছাড়া বৃষ্টি হলে আনাজের পাশাপাশি ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। আলু চাষ পিছিয়ে যাবে অনেকটাই। আনাজের দাম ফের বাড়বে।’’

ধনেখালি ব্লক কৃষি আধিকারিক দীপক হাজরা বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। পরবর্তী সময়ে কী হবে, সেটা জরুরি। মাত্রাছাড়া বৃষ্টি হলে আনাজে ক্ষতির আশঙ্কা থাকছেই।’’

সম্প্রতি আলুর দাম নিয়ে জলঘোলা হওয়ার পরে বর্তমানে অবশ্য তা থিতু রয়েছে। তবে আনাজের দামে ছেঁকা লাগছে সাধারণ মানুষের। বেগুন, টোম্যাটো, শসা, পটল, ঢ্যাঁড়শের দামে সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে। সিমের কেজি আড়াইশো টাকা। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ক্ষতি করলে দাম কোথায় পৌঁছবে, চিন্তা
সব মহলেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE