Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Serampore

ফাইনালের আগে বারপোস্ট কেটে পুকুরে, তবু জয়ী ফুটবল

বারপোস্ট কাটার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে ক্রীড়ামহলে। খেলার মাঠের রাজনীতিও সরগরম। অনেকেই মনে করছেন, রবিবারের ওই ফাইনাল বানচাল করতেই এই কাণ্ড।

বিকল্প: বাঁশের বারপোস্ট তৈরি করে চলছে খেলা। ছবি: প্রকাশ পাল

বিকল্প: বাঁশের বারপোস্ট তৈরি করে চলছে খেলা। ছবি: প্রকাশ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:০২
Share: Save:

মাঠ থেকে বারপোস্ট কেটে পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছিল কিছু লোক। শনিবার রাতে শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে এই ঘটনার পরেও অবশ্য ফুটবলের গতিরোধ করা যায়নি। বাঁশের বারপোস্ট তৈরি করে রবিবার মহকুমা লিগের প্রথম ডিভিশনের ফাইনাল হয়েছে। খুশি ক্রীড়াপ্রেমীরা।

তবে, বারপোস্ট কাটার ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে ক্রীড়ামহলে। খেলার মাঠের রাজনীতিও সরগরম। অনেকেই মনে করছেন, রবিবারের ওই ফাইনাল বানচাল করতেই এই কাণ্ড। বারপোস্ট কাটা নিয়ে মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার তরফে শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। কেউ অবশ্য ধরা পড়েনি।

সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক তরুণ মিত্র ব‌লেন, ‘‘কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, জানি না। তবে, খেলা বানচাল করতেই যে করা হয়েছে, সন্দেহ নেই।’’ শ্রীরামপুরের বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘খেলার সঙ্গে শত্রুতা জঘন্য কাজ। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’ চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই কাজ মানা যায় না।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাত ১১টার পরে ১০-১২ জন লোক মাঠে ঢুকে রড কাটার ব্লেড দিয়ে এক দিকের বারপোস্ট কেটে দেয়। রবিবার সকালে মাঠে গিয়ে দেখা গেল, বারের কিছুটা দাঁড়িয়ে আছে। পাশে ব্লেড পড়ে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ফাইনালের আগে এই কাজ কারা করল? এর সঙ্গে খেলা বা খেলাকে ঘিরে থাকা রাজনীতির প্রভাবশালী কোনও অংশ জড়িত? সরাসরি উত্তর মেলেনি। তবে, ঘটনা হচ্ছে, এই ফাইনা‌ল এবং সুপার ডিভিশনের নকআউটের খেলা আশপাশের একাধিক পুরসভার মাঠে করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, চেয়েও মাঠ মেলেনি। এর পরেই প্রথম ডিভিশনের ফাইনাল শ্রীরামপুর স্টেডিয়ামে করার সিদ্ধান্ত নেয় মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা।

শ্রীরামপুর পুরসভার পুর-পারিষদ সন্তোষ সিংহের বক্তব্য, ‘‘শ্রীরামপুর মহকুমা ফুটবলে প্রচুর গড়াপেটা হয়েছে। এতে বিভিন্ন ক্লাব ক্ষুব্ধ। সেই থেকেই বারপোস্ট কাটার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ বলে আমি মনে করি না। তবে, পুলিশ তদন্ত করে বিষয়টি বের করুক।’’

বিতর্কের মধ্যেও খেলা অবশ্য থেমে থাকেনি। রবিবার ফাইনাল হয় শেওড়াফুলির চলমান সমিতি এবং শিয়াখালা অগ্রগামী ক্লাবের মধ্যে। সকালে বারপোস্টের বদলে বাঁশ লাগাতে সাহায্য করেন চলমান সমিতির খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা। ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় শিয়াখালার দলটি। প্রথমার্ধে চলমান সমিতি ২-০ গোলে এগিয়েছিল। গোলদাতারা হলেন সমীর মাণ্ডি এবং সুজিত বাস্কে। দ্বিতীয়ার্ধে বৃষ্টিভেজা মাঠে ফুল ফোটা‌ন অগ্রগামীর রাহুল বাগ। হ্যাটট্রিক করে দলকে সেরার শিরোপা এনে দেন। চ্যাম্পিয়ন দলকে দেওয়া হল সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত ট্রফি। শান্তিময়ী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত ট্রফি পেল রানার্স দল।

ছাতা মাথায় অনেকে খেলা দেখলেন। চলমা‌ন সমিতির কোচ, প্রাক্তন ফুটবলার সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যা ঘটল, নিন্দার ভাষা নেই। তবে, খেলাটা শেষ পর্যন্ত হল, ভাল লাগছে।’’ ওই ক্লাবের টেকনিক্যা‌ল ডিরেক্টর, প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার সমীর চৌধুরীও মাঠে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বারপোস্ট কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। এমন কেন হবে! খেলাটা হওয়া খুব জরুরি ছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore football tournament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE