Advertisement
E-Paper

সোনার দামবৃদ্ধিতে মন্দা ডোমজুড়ের গয়না কারখানায়

ডোমজুড়ে ঘরে ঘরে মূলত সোনার উপরে হিরে বসিয়ে অলঙ্কার তৈরি হয়। কারিগর এবং কারখানা মালিক মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই কাজে যুক্ত।

কাজ কম সোনার গয়নার কারখানায়।

কাজ কম সোনার গয়নার কারখানায়। নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:২১
Share
Save

সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী। সোনার গয়না ছুঁতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। তার ধাক্কা লেগেছে স্বর্ণ শিল্পে। সেই আঁচ পড়ছে হাওড়ার ডোমজুড়ে সোনার গয়না তৈরির কারখানাগুলিতে। পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কারখানা মালিকেরা। বরাত কমে যাওয়ায় কারিগরদের কাজও কমেছে। টান পড়েছে রোজগারে।

ডোমজুড়ে ঘরে ঘরে মূলত সোনার উপরে হিরে বসিয়ে অলঙ্কার তৈরি হয়। কারিগর এবং কারখানা মালিক মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এই কাজে যুক্ত। কলকাতার বড় গয়নার শো-রুম থেকে বরাত আসে। সেই মতো গয়না গড়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কারখানা মালিকেরা জানান, বরাত নেওয়ার সময় সোনার যে দামের ভিত্তিতে শো-রুমের সঙ্গে তাঁরা চুক্তি করেন, অনেক ক্ষেত্রেই সেই দাম বেড়ে যায়। সেই দামে সোনা কিনে গয়না গড়ে দিতে গেলে বর্ধিত দাম দিতে রাজি হচ্ছেন না অনেক শো-রুম কর্তৃপক্ষ। ফলে, লোকসান হচ্ছে।

তরুণ ঘোষ নামে এক কারখানা-মালিক বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরেই সোনার দাম বেড়ে চলায় আমাদের সঙ্কট চলছে। কিন্তু এই দু’তিন মাস ধরে যে ভাবে দাম বাড়ছে, নজিরবিহীন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তিন-চার দিন অন্তর দাম বাড়ছে। একটা বরাত নিয়ে সেই দামের ভিত্তিতে গয়না শো-রুমে দেওয়ার জন্য ন্যূনতম যে সময় দরকার, আমরা তা পাচ্ছি না। গয়নার বর্ধিত দাম দিতে শো-রুম মালিকেরা রাজি হচ্ছেন না। ফলে, আমাদের লোকসান হচ্ছে।’’ দামের কারণে শো-রুমেও বিক্রি কমেছে। যিনি ১০ ভরি গয়না গড়াবেন বলে ঠিক করেছিলেন, তিনি ৮ ভরির বরাত দিচ্ছেন।

ডোমজুড় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সভাপতি সৈকতকুমার দেব বলেন, ‘‘বেশিরভাগ কারিগর ভরিপ্রতি গয়না তৈরির উপরে মজুরি পান। বরাত কমে যাওয়ায় কারিগরদের রোজগারও কমছে।’’ অনেক কারখানা-মালিক বরাতের অভাবে কারিগর ছাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকে কারিগরদের পর্যাপ্ত কাজ দিতে পারছেন না।

মন্দার হাত থেকে বাঁচতে অনেক কারখানা মালিক এবং কারিগর তামা বা রুপোর কাজে হাত দিয়েছেন। সৈকত বলেন, ‘‘সোনার দাম যদি এই ভাবে বাড়তে থাকে আরও অনেকেই এই কাজ ছেড়ে তামার দিকে ঝুঁকছেন। রুপোর দামও বাড়ছে। কী আর করা যাবে, খেয়ে-পরে বাঁচতে হবে তো!’’

হুগলির চুঁচুড়ার একটি গয়নার দোকানের কারিগর ভোলানাথ কর্মকার বলেন, ‘‘গত দু’-তিন মাসে সব মিলিয়ে ২০ ঘণ্টা কাজ করেছি কি না, সন্দেহ! মোবাইল ঘেঁটেই সময় কাটাচ্ছি। এ ভাবে কত দিন চলবে জানি না। ভাবছি, অন্য কিছু করতে হবে।’’

তথ্য সহায়তা: সুদীপ দাস।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

domjur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}