—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে বাম-কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর ‘স্পষ্ট ইঙ্গিত’ মিলেছে বলে দাবি সিপিএমের। হুগলিতে ১৮টির মধ্যে ন’টি ব্লকে বিজেপিকে তিনে ঠেলে বামেরা প্রধান বিরোধী হিসাবে উঠে এসেছে। এই ব্লকগুলির মধ্যে রয়েছে তারকেশ্বর ও হরিপাল, যেখানে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে কোনও প্রতিরোধই গড়তে পারেনি বামেরা। এই প্রেক্ষিতে ফের যাতে তৃণমূল-বিজেপি মেরুকরণ না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পথে দৃশ্যমানতা বাড়াতে চাইছে জেলা সিপিএম। তবে সে লড়াই যে বেশ কঠিন তা মানছেন সিপিএম নেতাদের একাংশ।
জাতীয় স্তরে বিরোধীদের ডাকা বৈঠকে একই টেবিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সীতারাম ইয়েচুরির উপস্থিতি কিছুটা হলেও বাম শিবিরে ‘অস্বস্তি’ তৈরি করেছে বলে মত সিপিএম জেলা নেতৃত্বের একাংশ। শুক্রবার ধর্মতলায় সমাবেশে বামেদের সমালোচনার সরব হতে দেখা যায়নি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজ্য-রাজনীতিতে ফের তৃণমূল-বিজেপি মেরুকরণ ঘটানোর লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই অবস্থান বলে মনে করছেন তাঁরা। বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে যাতে দলের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে কোনও ‘বিভ্রান্তি’ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে সিপিএম।
সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়াতে দলের গণসংগঠনগুলিকে সক্রিয় রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, যে সব জায়গায় পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল, সেখানে সক্রিয়তা বাড়ানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যে দাবিগুলি তোলা হয়েছিল, সেগুলি যাতে রূপায়িত হয়, সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রশাসনের উপরে চাপ তৈরি করতে পথে নামা হবে। সভা-সমাবেশে তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধেও সমান সরব থাকবেন কর্মী-নেতারা।’’
সিপিএম জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের দাবি, চণ্ডীতলা ১, চণ্ডীতলা ২, চুঁচুড়া-মগরা, হরিপাল, তারকেশ্বর, পান্ডুয়া-সহ ন’টি ব্লকে বামেরা পঞ্চায়েত ভোটে দ্বিতীয় হয়েছে। বাকি ন’টি ব্লকের চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়। জেলায় বিজেপির ভোট অনেকটাই কমেছে। বামেদের ভোট ১২ শতাংশ বেড়েছে। কোথাও কোথাও ভোটবৃদ্ধি ২০ শতাংশেরও বেশি।
দেবব্রত বলেন, ‘‘বামেরা অপ্রাসঙ্গিক বলে যে ধারণা তৈরির চেষ্টা গত পাঁচ-ছ’বছর ধরে চলছে, তা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে। মানুষ বুঝেছেন, তৃণমূলকে আটকাতে পারে বাম ও সহযোগীরা। আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। প্রতিরোধ আরও বাড়বে।’’
সিপিএম সূত্রে খবর, গত ১৬ জুলাই দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের ফল নিয়ে প্রাথমিক পর্বের কাটাছেঁড়া হয়েছে। আগামী ২৭ জুলাই ফের আলোচনায় বসবে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী। সেখানে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy