E-Paper

আলুবীজের দাম চড়া, ক্ষোভ হুগলি জুড়েই

পালাবদলের পরে এ রাজ্যে আলুবীজ উৎপাদনের চেষ্টা গুরুত্ব দিয়ে শুরু হয়েছিল কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৫
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ধান কাটা চলছে। হুগলিতে আলু চাষের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। কিন্তু পঞ্জাব থেকে আসা চন্দ্রমুখী আলুর বীজ বাজারে সে ভাবে মিলছে না বলে অভিযোগ তুললেন এ জেলার চাষিরা। তাঁদের ক্ষোভ, বাজারে জ্যোতি, হিমালিনি প্রজাতির আলুবীজ মিলছে। তার বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম ২০০০ টাকা। ক’দিন আগেও ওই বীজ ১৬০০ টাকায় বিকিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ভিন্‌ রাজ্যের বীজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এখানকার আলুবীজ সংগঠনের মাথাদের একাংশের ‘সখ্যতা’য় দাম বাড়ছে। কেউ কেউ বীজ জমিয়ে রাখছেন। যদিও আলুবীজ সংগঠনের কর্তা বা কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

পালাবদলের পরে এ রাজ্যে আলুবীজ উৎপাদনের চেষ্টা গুরুত্ব দিয়ে শুরু হয়েছিল কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু সেই চেষ্টা বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। তার জন্য দক্ষিণবঙ্গের আর্দ্রতাহীন আবহাওয়া না থাকাকেই মূলত দায়ী করা হয়। সেই কারণে, পশ্চিমবঙ্গ গোটা দেশে আলু উৎপাদনে প্রথম স্থান দখল করলেও বীজের জন্য পঞ্জাবের উপরে নির্ভরতা দূর হয়নি। আলু চাষিদের একাংশের অভিযোগ, সেই সুযোগ শুধু ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা নন, বীজ ব্যবসায়ী সমিতির মাথাদের একাংশ তথা শাসকদলের নেতাও নিচ্ছেন। তাঁদের অঙ্গুলিহেলনেই চাষিদের লাগামছাড়া দামে বীজ কিনতে হয়। আরও অভিযোগ, এই জেলায় আলুবীজ ব্যবসায়ী সমিতির এক কর্তার ব্যবসাস্থলের জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অন্য রাজ্যের ব্যবসায়ীদের জন্য।

ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আলুবীজের চড়া দাম নিয়ে অভিযোগের কিছুটা হলেও সারবত্তা আছে। কারণ, ক’দিন আগেও জ্যোতি আলুর বীজের দাম ছিল ১৫০০-১৬০০ টাকা কেজি বস্তা। সেই বীজই সোমবার ২০০০ টাকায় বিকিয়েছে। সিঙ্গুর, তারকেশ্বর, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় আলুবীজের বাজারে মোটামুটি একই দর গিয়েছে। এই দাম ২৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এক চাষির প্রশ্ন, ‘‘কোথাও কোনও ‘কারসাজি’ যদি না-ই থাকবে, তা হলে দাম অত বাড়ল কেন?’’

অভিযোগ উড়িয়ে আলুবীজ ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক তথা তারকেশ্বরে শাসকদলের কাউন্সিলর স্বপন সামন্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দায়িত্বে থাকলে এমন বহু কথাই শুনতে হয়। আলুবীজ পচনশীল। জমিয়ে রাখা যায় না। আর দামও এখন নামছে। প্রত্যেক চাষি আলুবীজ পাবেন। আমার ব্যবস্থাস্থলে ওঁরা এসে বসেন, এটা ঘটনা। তাও নিয়মিত নয়।’’ আলুবীজ কারবারিরা জানিয়েছেন, চন্দ্রমুখী আলুবীজের চাহিদা কম থাকে। ইতিমধ্যেই ওই বীজ সংগ্রহ করে ফেলেছেন সংশ্লিষ্ট চাষিরা।

আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্যের কর্তা লালু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আলুবীজের দাম ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা বস্তা বাঁধা থাকলেই ভাল হত। সব চাষি যাতে বীজ কিনতে পারেন, সেটা সকলের দেখা উচিত। কারণ, আলু চাষের খরচ এখন বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে।’’ হুগলি জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আলুবীজের মজুতদারি ঠেকাতে ব্লকের কৃষি উন্নয়ন আধিকারিকরা নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছেন। কোনও অভিযোগ থাকলে চাষিরা তাঁদের জানাতে পারেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tarakeshwar potato farmers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy