Advertisement
১৭ জুন ২০২৪
Howrah Municipal Corporation

হাওড়ায় চিন্তা বাড়াচ্ছে বিপজ্জনক বাড়ি, তৈরি রাখা হচ্ছে স্কুল ভবন

রেমালের প্রভাবে রবিবার দুপুর থেকেই প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয় হাওড়ায়। অতিবৃষ্টিতে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কায় আগে থেকেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।

রিমেল ঝড় আসার আগেই প্রভাব পড়ছে শহরে বৃষ্টি সাথে দমকা হওয়া রবিবার হাওড়া ব্রিজ ও হাওড়া স্টেশন এলাকায় বৃষ্টি। ছবি দীপঙ্কর মজুমদার।

রিমেল ঝড় আসার আগেই প্রভাব পড়ছে শহরে বৃষ্টি সাথে দমকা হওয়া রবিবার হাওড়া ব্রিজ ও হাওড়া স্টেশন এলাকায় বৃষ্টি। ছবি দীপঙ্কর মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ০৭:৪৩
Share: Save:

বৃষ্টিতে জমা জলের পাশাপাশি বর্তমানে হাওড়া শহরে সব থেকে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরসভা চিহ্নিত ৪০০টি বিপজ্জনক বাড়ি। ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে ওই বাড়িগুলির কতটা ক্ষতি হতে পারে, তা নিয়েই চিন্তিত পুরকর্তারা। ঝড়ের তাণ্ডবে বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় তাই পুরসভা আটটি ডেমোলিশন স্কোয়াড, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তিনটি দল-সহ পর্যাপ্ত কর্মী প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই সব বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাসকারীদের অবিলম্বে সরে যেতে বলা হয়েছে।

রেমালের প্রভাবে রবিবার দুপুর থেকেই প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয় হাওড়ায়। অতিবৃষ্টিতে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কায় আগে থেকেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন ও হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে পুর এলাকার আটটি স্কুল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বড় ধরনের কোনও বিপর্যয় হলে যাতে সেখানে বাসিন্দাদের আশ্রয় দেওয়া যায়। ওই আটটি স্কুলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলে রেখেছে পুরসভা। স্কুলগুলিতে জোগান দেওয়ার জন্য ত্রিপল, শুকনো খাবার ও জলের পাউচের বন্দোবস্ত করা হয়েছে সব বরো অফিসগুলিতে। রাত পৌনে ১১টা থেকে হাওড়ায় শুরু হয়েছে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি। হাওড়ার নিচু এলাকার ১৩০০ জনকে বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। ।

পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, ভারী বৃষ্টি হলে জমা জল সরাতে পঞ্চাননতলা রোড, বেলগাছিয়া, সাঁতরাগাছির মতো হাওড়া শহরের ৬৭টি জায়গায় পাম্প চালানো হবে। এ ছাড়া, ছ’টি ভ্রাম্যমাণ পাম্পও রাখা হয়েছে। রবিবার সুজয় বলেন, ‘‘হাওড়ায় ৪০০টি বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে আমরা চিন্তিত। ইতিমধ্যে পুরসভায় কন্ট্রোল রুম (নম্বর ৬২৯২২৩২৮৭০) খোলা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা সেটি চালু থাকবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন বেশি রাতে ঝড় উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়ার আগে থেকেই পরিস্থিতি নজরে রাখতে পুর ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারেরা সারা রাত কন্ট্রোল রুমে থাকবেন। বাড়ি ভাঙলে বা গাছ পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে আটটি ডেমোলিশন দল ও তিনটি বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। রাস্তায় জমা জল সরাতে পুরকর্মীদের ম্যানহোল খুলে পরিষ্কার করে জল সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুরকর্তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আয়লা-র সময়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রয়োজনে তাদের ডেকে পাঠানো হবে। অন্য দিকে, গঙ্গায় সমস্ত লঞ্চ পরিষেবা রবিবার ও আজ, সোমবার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। সমিতির চেয়ারম্যান বাপি মান্না জানান, ঝড়ের কারণে দু’দিন ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে সোমবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঝড়ে যাতে লঞ্চগুলি ভেসে না যায়, সে জন্য সেগুলিকে মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

রেমালের সঙ্গে যুঝতে প্রস্তুতি নিয়েছে দমদম, উত্তর ও দক্ষিণ দমদম পুরসভাও। পাতিপুকুর থেকে দমদম, বিরাটিমুখী রেললাইন সংলগ্ন এলাকা-সহ যে সব নিচু এলাকায় জল জমার প্রবণতা রয়েছে, সেখানে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন ওয়ার্ডে কমিউনিটি হল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে সংযুক্ত এলাকার লোকেদের সেখানে সরানো যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE