E-Paper

নাবালিকা বিয়ে ও মাতৃত্ব রোধে উদ্যোগ হাওড়ায়

জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, মূলত গরিব মানুষ বসবাস করেন এমন এলাকায় প্রান্তিক শ্রেণির মধ্যে নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা বেশি।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ০৮:২৭
এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

গত অর্থবর্ষে (২০২৪-’২৫) হাওড়া জেলার শ্যামপুর ২ ব্লকে প্রায় দেড় হাজার নাবালিকা সন্তানের জন্ম দিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। উলুবেড়িয়া ১ এবং ২ ব্লকেও নাবালিকা মায়ের সংখ্যা কম নয়। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশলয় দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘রাজ্যের নিরিখে হাওড়ায় নাবালিকা মাতৃত্বের হার সব থেকে কম। বেশ কিছু পদক্ষেপ করে সেই সংখ্যাও আমরা কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছি। গত জানুয়ারি মাসে নাবালিকা মায়ের হার ছিল ১২ শতাংশ। মার্চ মাসের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে। তবে এই সংখ্যা আরও কমাতে হবে।’’

আইন অনুযায়ী ২১ বছরের আগে ছেলেদের এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ। ওই বয়সের আগে বিয়ে হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করার কথা। নির্দিষ্ট বয়সের আগে বিয়ে থেকে ছেলেমেয়েদের বিরত করতে লাগাতার প্রচার চালানো হয় প্রশাসনের তরফে। আবার কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প চালু হওয়ার পরে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে অনেকাংশেই আটকানো গিয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়। তা সত্ত্বেও এত নাবালিকা মা কেন?

জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, মূলত গরিব মানুষ বসবাস করেন এমন এলাকায় প্রান্তিক শ্রেণির মধ্যে নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা বেশি। তার ফলেই এই পরিস্থিতি। নাবালিকা বিয়ের খবর পেলেই প্রশাসনের তরফে অভিযান চালিয়ে তা বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়। নাবালিকার অভিভাবকের থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। পাত্রের পরিবারকেও বোঝানো হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই কয়েক দিন পরে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে ফের নাবালিকার পরিবার ওই পাত্রের সঙ্গেই তার বিয়ে দিয়ে দেয়, এমন ঘটনাও ঘটে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, যে সব জায়গায় নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা বেশি, সেই সব এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েতকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা মাসের শেষ শনিবার বৈঠক করছেন। আশাকর্মীদের নিয়ে গ্রামে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। নাবালিকা বিয়ে আটকাতে পকসো আইন কার্যকর করতে পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

শ্যামপুর ২-এর বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার জানান, বিভিন্ন স্কুলে সপ্তম শ্রেণি থেকে শুরু করে সব ছাত্রীদের মধ্যে নাবালিকা বিয়ের কুফল বোঝানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। এ বার তাঁরা গ্রামে গ্রামে যাবেন। উলুবেড়িয়া ১-এর বিডিও রিয়াজুল হক বলেন, ‘‘বহিরা এবং তপনা পঞ্চায়েতে নাবালিকা বিয়ের হার বেশি। এই দু’টি পঞ্চায়েতে নাবালিকাদের সন্তানদের জন্ম শংসাপত্র দেওয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হচ্ছে।’’ এর ফলে, ওই দুই জায়গাতেই নাবালিকা বিয়ের হার কমেছে বলে তাঁর দাবি। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে আটকাতে প্রতি ব্লকেই প্রচার চলবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy