২৬৭ বছর ধরে হুগলির গুপ্তিপাড়ায় পূজিত দেবী বিন্ধ্যবাসিনী। কথিত, এটিই বাংলার প্রথম বারোয়ারি পুজো।
শোনা যায়, দুর্গাপুজোর সময় গুপ্তিপাড়ায় এক জমিদারবাড়িতে প্রতিমা দেখতে গিয়েছিলেন গ্রামের মহিলারা। কিন্তু বাধা পেয়ে অপমানিত হয়ে ফিরে আসেন তাঁরা। তার পরে ১২ জন ‘ইয়ার’ বা বন্ধু মিলে চাঁদা তুলে বারোয়ারি পুজো শুরু করেন। দুর্গাপুজোর সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এক মাস পরে জগদ্ধাত্রীকে দেবী বিন্ধ্যবাসিনী রূপে পুজো করেন তাঁরা। সেই স্থান বিন্ধ্যবাসিনীতলা নামে পরিচিত হয়। সেখানে পাকা দালান করে দেওয়া হয় সেই জমিদারবাড়ির তরফে।
দক্ষিণ ভারতে বিন্ধ্যবাসিনী পুজো হয়। তা বাংলার জগদ্ধাত্রীরই রূপ। সেই রূপকে প্রথম ঘটে পুজো করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। মতান্তর থাকলেও জানা গিয়েছে, ১১৬৬ বঙ্গাব্দ তথা ইংরেজির ১৭৫৯ সালে প্রথম এই বারোয়ারি জগদ্ধাত্রীপ্রতিমার পুজো শুরু হয় গুপ্তিপাড়ায়। বেঙ্গল গেজেটের সূত্রে জানা যায় এই সময়কাল। মন্দিরের গায়ে আজও খোদিত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পুরানো কাঠামোয় আজও পুজো হয় প্রতিমার। এখানে জগদ্ধাত্রী উদয়কালীন সূর্যের মতো লাল বর্ণের। রয়েছে চার হাত। প্রতিমার একপাশে বিষ্ণু ও অন্য পাশে শিবের বিগ্রহ রয়েছে। জগদ্ধাত্রীর ভৈরব যেহেতু নীলকন্ঠ শিব, তাঁর প্রতীক রূপে এখানে শিবকে পুজো করা হয়। বিষ্ণু থাকেন অধিপতি দেবতা হিসাবে। ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর পুজো এক দিনে হয়ে থাকে। চাঁচিকুমড়ো ও আখ বলি হয়। নবমীর দিন মালসা ভোগ দেওয়া হয়। রাতে আতশবাজি পোড়ানো হয়। ক্রমে গুপ্তিপাড়ায় অনেক বারোয়ারি জগদ্ধাত্রীপুজোর প্রচলন হয়েছে। তবে নিরঞ্জনের সময়ে সকলের আগে থাকেন মা বিন্ধ্যবাসিনী।