Advertisement
E-Paper

Arambag: জবরদখল হচ্ছে জমি, নোটিস পাঠিয়েই ক্ষান্ত পূর্তকর্তারা

পূর্ত দফতরের ৪ কাঠা জায়গা দখলদারের কাছ থেকে কিনে সেখানে বাড়ি বানিয়ে বিপাকে পড়েছেন গোঘাটের বেঙ্গাইয়ের চাল কলের শ্রমিক সভাপতি হাঁসদা।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৬:১২
আরামবাগের কালীপুর এবং বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের বেলেপাড়ায় জবরদখল করে অবৈধ নির্মাণ।

আরামবাগের কালীপুর এবং বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের বেলেপাড়ায় জবরদখল করে অবৈধ নির্মাণ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

জায়গা পূর্ত দফতরের। অথচ তাদের জমিই কেনাবেচার রমরমা শুরু হয়েছে আরামবাগ মহকুমা জুড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতে গ্রাম সংলগ্ন বিভিন্ন সড়কের গায়ে দফতরের জমি-জায়গা গায়েব তো হচ্ছেই। পাশাপাশি শহরে খোদ তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাও পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে কোথাও লিজ় দিচ্ছে, কোথাও নিজেরাই ‘হকার্স কর্নার’ নাম দিয়ে নির্মাণ হাঁকিয়ে ভাড়া দিচ্ছে। পূর্ত দফতর সেক্ষেত্রে নীরব দর্শক হয়েই থাকছে।

ওই সব জবরদখলের অধিকাংশই সরানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ পূর্ত দফতরের বিভিন্ন বিভাগের (রাস্তা, নির্মাণ ১ ও ২) মহকুমা বাস্তুকারদের। তাঁদের অভিযোগ, অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন এবং শাসকদলের উপরই নির্ভর করতে হয়। সেই সহযোগিতা অধিকাংশ সময় পাওয়া যায় না। তাই নোটিস দেওয়া ছাড়া দফতরের কিছু করার থাকে না।

সম্প্রতি পূর্ত দফতরের ৪ কাঠা জায়গা দখলদারের কাছ থেকে কিনে সেখানে বাড়ি বানিয়ে বিপাকে পড়েছেন গোঘাটের বেঙ্গাইয়ের চাল কলের শ্রমিক সভাপতি হাঁসদা। সেটা ভেঙে ফেলার নোটিস দিয়েছে পূর্ত দফতর। একই চালকলের শ্রমিক সভাপতির স্ত্রী বিলাসীর অভিযোগ, “দখলদারকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ওই ৪ কাঠা জমিটা কেনা হয়। প্রায় মাস ছয় ধরে বাড়ি তৈরির সময় কেউ কিছু বলেনি। জমি কেনার টাকা বাদেও প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। মূল রাস্তা থেকে প্রায় ৪০ ফুট দূরে করা সত্ত্বেও সেটা ভেঙে ফেলার চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জবরদখল সরাতে পূর্ত দফতর যে নোটিস দিচ্ছে, সেটা কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হচ্ছে না। জবরদখল সরাতে না পেরে রাস্তা ছোট করে দেওয়ার নমুনাও অজস্র বলে জানিয়েছেন তাঁরা। শাখা রাস্তাগুলি তো বটেই, এমনকি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কও ছোট করতে হয়েছে। আরামবাগ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের রামজীবনপুর সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কটি (৭ নম্বর) ১০ মিটার চওড়া করে সংস্কার হলেও হাজিপুরে প্রায় ১৫০ মিটার অংশ রয়ে গিয়েছে আগের মতোই ৫ মিটার।

একইভাবে আরামবাগ থেকে বর্ধমান, খানাকুলের বন্দর, গড়েরঘাট এবং সড়ক নিগমের অধীন আরামবাগ থেকে চাঁপাডাঙা পর্যন্ত চার লেনের কাজেও পারুল, কাবলে, পুরশুড়ার কিছু প্রভাবশালী জবরদখলকারীকে উৎখাত করা যায়নি। সেখানে রাস্তা বা রাস্তার মাঝে ডিভাইডারের মাপ ছোট করে কাজ করতে হয়েছে।

এ বিষয়ে অবশ্য পূর্ত দফতরের (রাস্তা বিভাগ) এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দিব্যেন্দু বাগ বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের জায়গায় বেআইনি দখল থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’

ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

আরামবাগ শহরের মধ্যে যানজটের উৎস বাসস্ট্যান্ড থেকে পল্লিশ্রী পর্যন্ত ৩০০ মিটার অংশ নিকাশি নালা, ফুটপাত-সহ মোট ৯০ ফুট চওড়া করার পরিকল্পনা ছিল পূর্ত দফতরের নির্মাণ (১) বিভাগের। তার জন্য পুরসভার দখল করা নজরুল মার্কেট, স্টুডেন্টস হেলথ হোম, পল্লিশ্রী হকার্স কর্নারে সরানোর জন্য ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পুরসভাকে নোটিস পাঠানো হয়। ১৫ দিনের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষ চলতি বছরের মার্চে স্টুডেন্টস হেলথ হোমের একটা অংশ ভাঙা হয়েছে। বাকি নজরুল মার্কেট এবং পল্লিশ্রী হকার্স কর্নারে হাত পড়েনি। অগত্যা রাস্তাটির পরিকল্পনা বদলে ৭০ ফুট থেকে ৭৮ ফুটের পরিসর রাখা হচ্ছে।

জবরদখল রুখতে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন মহকুমার বিভিন্ন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং শাসক দলের জেলা এবং ব্লক নেতারা। দলের আরামবাগের সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি পলাশ রায় বলেন, “মায়াপুর, জয়রামপুর, গড়বাড়ি ইত্যাদি রাস্তা দখল করে আমাদের দলীয় কার্যালয়গুলো সবই সরিয়ে দিয়েছি। রাস্তা নির্মাণে কোথাও বাধা সৃষ্টি হলে পূর্ত দফতরকে সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়েছি।”

Land TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy