E-Paper

নতুন আইনের প্রতিবাদে কর্মবিরতি আইনজীবীদের

আইনজীবীদের কর্মবিরতি এবং কালা দিবস পালনের কারণে সোমবার হুগলির আরামবাগ আদালত অচল রইল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৯:২৬
-

লোকজন নেই আরামবাগ মহকুমা আদালত চত্বরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

সোমবার থেকে চালু হল ন্যায় সংহিতা, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং সাক্ষ্য অধিনিয়ম। নতুন এই তিন ফৌজদারি আইনের প্রতিবাদে এ দিন রাজ্য বার কাউন্সিলের ডাকা কর্মবিরতি পালিত হল হুগলি ও হাওড়ার আদালতে। আইনজীবীরা আদালতে এলেও কাজ করেননি। মামলার কাজে আসা অনেকেই ফিরে যান। তাঁদের ভোগান্তি হয়। যদিও আইনজীবীদের দাবি, পূর্বঘোষিত এই কর্মবিরতির কথা মক্কেলদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই মানুষ সে ভাবে আসেননি।

আইনজীবীদের কর্মবিরতি এবং কালা দিবস পালনের কারণে সোমবার হুগলির আরামবাগ আদালত অচল রইল। শুনানি থাকা মামলার বাদী-বিবাদীরা ফিরে গেলেন। গোঘাটের আগাই থেকে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে মামালার শুনানিতে আসা ঝর্ণা গোস্বামীর ক্ষোভ, ‘‘আগে জানিয়ে কর্মবিরতি করলে হয়রানি এবং যাতায়াতের আর্থিক ক্ষতি হত না। ফের কবে শুনানি হবে, আইনজীবী জানাবেন বলেছেন।’’ একই অভিযোগ বিভিন্ন মামলা ও শংসাপত্র নিতে আসা খানাকুলের বামনখানার বাবলু দোলুই, আরামবাগের কেশবপুরের সুব্রত রায় প্রমুখের। আরামবাগ বার অ্যসোসিয়েশনের পক্ষে অরূপ হাজরা বলেন, ‘‘সিদ্ধান্ত মতোই আমরা আজ কাজ করিনি।’’

চুঁচুড়া আদালতের আইনজীবী তথা হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের নির্মাল্য চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের নতুন আইনে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আজকের দিনটি তাই কালা দিবস হিসেবে পালন করে আমরা কাজ থেকে বিরত থেকেছি।’’ এই আদালতের আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা স্বপন পাল জানান, তাঁর কাছে এ দিন বিশেষ কাজ ছিল না। তবে কোনও আইনজীবী স্বেচ্ছায় কাজ করতে চাইলে কেউ আপত্তি জানাতেন না। স্বপনের কথায়, ‘‘নতুন আইনের অনেক ভাল দিকও রয়েছে।’’

শ্রীরামপুর আদালতের আইনজীবীরা বার কাউন্সিলের সদস্যেরা কালো ব্যাজ পড়ে প্রতিবাদ করেন নতুন তিন আইনের। দুপুরে আদালত চত্বর ছিল ফাঁকা। বিচারের কাজে আদালতে আসা মানুষজনকে সমস্যায় পড়তে হয়। আইনজীবী জগৎজ্যোতি রায়চৌধুরী, তরুণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, স্নেহেন্দু রায় প্রমুখের দাবি, ‘‘অবিলম্বে এই কালা আইন বাতিল করতে হবে।’’ জগৎজ্যোতির বক্তব্য, ‘‘নতুন আইনের ধারা ও উপধারার বেশিরভাগই সাধারণ মানুষের পরিপন্থী ও অধিকার বিরোধী। এই আইন চললে সাধারণ মানুষের যে আইনগত অধিকার ছিল, সেগুলি খর্ব এবং লুপ্ত হবে। এর প্রতিবাদ লাগাতার হওয়ার দরকার, যতক্ষণ না এই আইন পরিবর্তন করা হয়।’’ বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বৃহৎ স্বার্থে বিচারপ্রার্থীদেরও কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করা উচিত।’’

শ্রীরামপুরের বিজেপির আইনজীবী সেলের আহ্বায়ক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নতুন আইনের কিছু ধারায় কড়া শাস্তিবিধান রয়েছে। তবে অনেক ভাল দিকও রয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার পরে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। তা ছাড়া, এক দিনের প্রতিবাদে আইন বদলে যাবে! এটা অযৌক্তিক মনে হচ্ছে।’’ চন্দননগর আদালতেও কর্মবিরতি এবং কালা দিবস পালন করেন আইনজীবীরা।

হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতেও আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করেন। তার ফলে আদালতের দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিভাগে
কাজ হয়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy