দু’দিনের কয়েক পশলা বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন হল বেলগাছিয়া ভাগাড় সংলগ্ন লিলুয়ার বি রোড ও সি রোড। ঘরের মধ্যে বইছে হাঁটু সমান নোংরা জল। বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধস নেমে নিকাশি নর্দমা ভেঙে পড়ার পরে গত ৪০ দিনেও জমা জলের সমস্যা না মেটায় শুক্রবার ফের পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে যান উত্তর হাওড়ার বিধায়ক তথা হাওড়া পুরসভার সাফাই দফতরের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত, প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম চৌধুরী। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে নিকাশি সমস্যার সুরাহার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গৌতম জানান, সমস্যা না মিটলে তিনি এলাকার লোকজনকে নিয়ে কেএমডিএ-র অফিসে যাবেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার হাওড়ায় কয়েক পশলা জোরালো বৃষ্টি ও ঝড়ের পরে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার সঙ্গে বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পাশে লিলুয়ার বি রোড ও সি রোডে হাঁটুজল দাঁড়িয়ে যায়। বৃষ্টি থামার পরে শুক্রবার সব জায়গায় জল প্রায় নেমে গেলেও লিলুয়ার বিস্তীর্ণ অংশে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার না হওয়ায় জল জমে ছিল। ক্ষুব্ধ এক বাসিন্দা অর্চনা কর্মকার বলেন, ‘‘আমরা গত দু’মাস ধরে নর্দমার জলের মধ্যে থাকছি। আজ পর্যন্ত পুরসভা বা কেএমডিএ সুরাহা করতে পারল না। তবে, বিধায়ক আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, পাঁচ দিনের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।’’
মার্চ মাসের শেষ দিকে পুরসভার পাইপলাইনে বিস্ফোরণ হয়ে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ভয়াবহ ধস নামে। এর জেরে উত্তর হাওড়ার মূল নিকাশি নালা, যেটি ভাগাড়ের উপর দিয়ে গিয়ে পচাখালে মিশেছে, সেটি পুরোপুরি ভেঙে যায়। ফলে, বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পুড়ে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিকাশি নালা তৈরির দায়িত্ব দেন কেএমডিএ-কে। প্রথমে শিট পাইলিং করে নর্দমা তৈরির চেষ্টা হয়। কিন্তু তা ব্যর্থ হওয়ায় মাইক্রো টানেলিং করার চেষ্টা করেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেই প্রচেষ্টাও বিফলে যায়। ফলে, নিকাশির সমস্যা শেষ পর্যন্ত মেটেনি। এর উপরে গত দু’দিনের বৃষ্টিতে জমা জলের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। লোকজনের বাড়িতে ঢুকে যায় নর্দমার জল।
এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন এলাকার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখান থেকেই কেএমডিএ-র আধিকারিকদের ফোন করেন। পরে বিধায়ক জানান, কোনও ভাবেই ওই নর্দমা তৈরি করা সম্ভব না হওয়ায় কেএমডিএ-কে দিয়ে শালবল্লার পাইলিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গৌতম বলেন, ‘‘সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তাই মাটিতে তিন-চার ফুট গর্ত খুঁড়ে দু’পাশে শালবল্লা দিয়ে তার নীচে কংক্রিট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরে বড় নিকাশি পাইপ বসানো হবে।’’ বিধায়কের দাবি, এই পদ্ধতিতে কাজ হলে ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। কিন্তু, স্থায়ী সমাধান হবে। অন্য দিকে কেএমডিএ জানিয়েছে, পাঁচ দিনের মধ্যে তারা জমা জল নামিয়ে দেবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)