সোমবার শরৎচন্দ্রের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর জন্মস্থান দেবানন্দপুরে ভিড় পর্যটকদের। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য ১৪৮ তম জন্মদিন পেরোলো কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের। লেখকের স্মৃতিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরতে জন্মস্থান হুগলির দেবানন্দপুরে পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করেছেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে এলাকার দীর্ঘ দিনের দাবি মিটবে।
কী পরিকল্পনা করছে সরকার?
বিধায়ক জানান, এই কাজে রাজ্য সরকার প্রথম পর্যায়ে আড়াই কোটি টাকা দেবে। শরৎচন্দ্রের জন্মভিটে, তিনি যে পাঠশালায় পড়তেন, ভগ্নপ্রায় সেই প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালা, চারটি শিবমন্দির, সেমিনার হল সংস্কার করা হবে। তাঁর স্মৃতি বিজরিত স্থানগুলির সৌন্দর্যায়ন করা হবে। জোড়ামন্দির সংলগ্ন মাঠের সীমানা পাঁচিল দেওয়া হবে। দু’টি তোরণ তৈরি করা হবে। অতিথি নিবাস, ক্যান্টিন হবে।
এই ঘোষণায় খুশি স্থানীয় মানুষ, শরৎ-অনুগামীরা। তাঁরা চান, যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু হোক। এক বছর পরেই কথাশিল্পীর জন্ম সার্ধ-শতবর্ষ। তার আগে বাইরের মানুষের জন্য সাজিয়ে গুছিয়ে খুলে দেওয়া হোক শরৎ-গ্রাম।
তবে স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, আগেও দেবানন্দপুরকে ঢেলে সাজার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। রাস্তা সংস্কার এবং তিন জায়গায় আলো বসানো বাদে কার্যত আর কিছুই হয়নি। শরৎচন্দ্র স্মৃতি পাঠাগারের প্রাক্তন গ্রন্থাগারিক শ্যামল সিংহ বলেন, ‘‘অনেক আশ্বাস ২০১৬ সালেও শুনেছিলাম। তার প্রায় কিছুই হয়নি। তবে নতুন ঘোষণায় ফের আশ্বস্ত হলাম। জন্মস্থানে শরৎচন্দ্রের স্মৃতিকে আগলে রাখা সত্যিই জরুরি। তাঁর বহু লেখায় এই গ্রামের নানা স্থান, তাঁর নিজের স্মৃতিজড়িত।’’ দেবানন্দপুরের বাসিন্দা মধুসূদন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকাবাসী হোন বা বাইরের লোক, শরৎপ্রেমী মাত্রই এমন ঘোষণায় খুশি হবেন। কাজটা হোক।’’ অসিতের বক্তব্য, ‘‘আগে বলেছিলাম, চেষ্টা করছি। এ বার ঘোষণা হল। সেই মতোই কাজ হবে।’’
শরৎচন্দ্রের জন্মভিটে, তাঁর গুরুগৃহ প্যারী পণ্ডিতের পাঠশালার জীর্ণ দশা নিয়ে মঙ্গলবার আনন্দবাজারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দেবানন্দপুরে পর্যটন কেন্দ্র তৈরি নিয়ে এলাকাবাসী এবং শরৎচন্দ্রকে নিয়ে চর্চা করা লোকজনের দাবিও উঠে আসে ওই প্রতিবেদনে। বিধায়ক জানান, ওই দিনই পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন তাঁকে ফোন করে দেবানন্দপুরে পর্যটনকেন্দ্র তৈরির কথা বলেন। অসিত বলেন, ‘‘পর্যটন এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের নির্দেশে এই ঘোষণা করলাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পেনে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই মন্ত্রী বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন। দেবানন্দপুরের মানুষের মনের আকাঙ্খা পূর্ণ হবে। এই ঘোষণার মধ্যে দিয়ে এখানকার মানুষের ভাবাবেগকে সম্মান জানাল রাজ্য সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy