Advertisement
E-Paper

Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আশায় শাটল কক ব্যবসায়ীরা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়া জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছেন, এলাকায় উন্নত মানের হাঁস চাষের।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৫:২৪
উলুবেড়িয়ায় শাটল কক তৈরির কারখানায় চলছে কাজ।

উলুবেড়িয়ায় শাটল কক তৈরির কারখানায় চলছে কাজ। ছবি: সুব্রত জানা।

একটা সময়ে উলুবেড়িয়ার ঘরে ঘরে ছিল ব্যাডমিন্টন খেলার শাটল ককের কারখানা। কিন্তু এখন এই শিল্পের তেমন রমরমা আর নেই। এই শিল্পকে বাঁচাতে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়া জেলার প্রশাসনিক পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠকে প্রস্তাব দিয়েছেন, এলাকায় উন্নত মানের হাঁস চাষের। কারণ, হাঁসের পালক দিয়েই শাটল কক তৈরি হয়। কারখানা মালিক এবং ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, হাঁসের চাষ হলে কাঁচামালের সমস্যা অনেকটা মিটবে। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, প্রকল্পটি ঠিকভাবে রূপায়ণ করতে হবে। তবেই এর থেকে সুফল পাওয়া যাবে।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে শিল্পের সমস্যাটির কথা তুলে ধরে উলুবেড়িয়া চেম্বার অফ কমার্স। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে হাঁস পালনের কাজে লাগানো যায়। জেলা শিল্পকেন্দ্রের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, তাঁরা এলাকায় যাবেন। হাঁস পালনের উপযুক্ত পুকুর কোথায় পাওয়া যায় তা দেখা হবে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সহায়তাও নেওয়া হবে।

ব্যবসার হাল খারাপ হলেও এখনও উলুবেড়িয়ার তৈরি শাটল ককের সুনাম দেশজুড়ে। প্রকাশ পাড়ুকোনের মতো তারকা খেলোয়াড়ও নিয়মিত এই এলাকার শাটল কক ব্যবহার করতেন। বাণীতবলা, বাণীবন, যদুরবেড়িয়া, রাজাপুর প্রভৃতি জায়গায় এক সময় প্রচুর কারখানা ছিল। মালিক-কারিগর মিলিয়ে অন্তত দশ হাজার পরিবারের অন্নসংস্থান হত এই শিল্পের মাধ্যমে।

ধীরে ধীরে পঞ্জাব আর চিনের তৈরি শাটল কক বাজারে আসতে শুরু করে। তাদের বিপণন পদ্ধতিও উন্নত। ফলে উলুবেড়িয়ার কারখানাগুলি পিছু হঠে। প্রতিযোগিতায় যুঝতে না পেরে অনেক কারখানা উঠে যায়। কাজ না পেয়ে পেশা বদল করেন কারিগররা।

মুমূর্ষু এই শিল্পকে বাঁচানোর জন্য ২০০৯ সালের গোড়ায় সরকারের তরফ থেকে কারখানা মালিকদের ক্লাস্টার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর শর্ত ছিল, কারখানা মালিকরা জমি কিনবেন। সেখানে উন্নত মানের যন্ত্রপাতি বসাবে সরকার। সেখান থেকে ন্যূনতম খরচে শাটল কক তৈরি করতে পারবেন কারখানা মালিকেরা। ফলে তাঁরা শাটল ককের দাম কম রাখতে পারবেন।

কারখানা মালিকদের দাবি, তাঁরা চাঁদা তুলে জমি কেনার টাকা জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে ক্লাস্টার করার ব্যাপারে কোনও আগ্রহ দেখানো হয়নি। যে সব কারখানা মালিক ক্লাস্টার তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম গোপাল অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা ক্ষুদ্র শিল্প দফতর তো বটেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাথেও আলোচনায় বসেছিলাম। কিন্তু সাড়া পাইনি। হতাশ হয়ে জমি কেনার জন্য যে যত টাকা চাঁদা দিয়েছিলাম তা ফিরিয়ে নিই।’’

কাঁচা মাল অর্থাৎ হাঁসের পালক এই শিল্পের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত মানের হাঁসের পালক আমদানি করতে কয়েকজন ব্যবসায়ী চিনও ঘুরে এসেছেন। কিন্তু সেখানেও কেন্দ্রীয় সরকারের লাল ফিতের ফাঁস বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ। একটা সময়ে বাংলাদেশ থেকে হাঁসের পালক আসত। সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তা হলে এখন কোথায় পালক পান তাঁরা? গোপালবাবু বলেন, ‘‘গ্রামে ঘুরে ঘুরে ফড়েরা হাঁসের পালক কিনে আনেন। তাঁদের কাছ থেকে আমরা কিনি।’’ তাঁর দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে চিন থেকে কক আমদানি হচ্ছে না। ফলে এই সময়টা হারানো বাজার ধরার
জন্য আদর্শ।

সরকারের তরফে হাঁস চাষ করে কম দামে উন্নত মানের পালক সরবরাহ করা হলে শিল্পটি তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা। কারখানার মালিক সাইদুর রহমান বলেন, ‘‘সরকারকে প্রকল্পটি ঠিক ভাবে রূপায়ণ করতে হবে। তবে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই প্রস্তাব দিয়েছেন তা যথাযথ ভাবেই রূপায়িত হবে বলেই আমরা আশা রাখি।’’

Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy