গাড়ির হর্ন আর সাইলেন্সরবিহীন মোটরবাইকের দাপটে কান পাতা দায়। তা নিয়ে কারও কাছে অভিযোগ জানানোরও উপায় নেই। পুলিশ নীরব দর্শক। জোরে হর্ন না বাজানোর আবেদন জানিয়ে রাস্তার ধারে ‘নো হর্ন’ বোর্ড থাকার কথা। জেলার অধিকাংশ এলাকায় অমিল সেই বোর্ডও। হাওড়ার বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, শ্যামপুরের চেনা ছবি এটাই।
এয়ার হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ। সেটা জানেন অনেকেই। কিন্তু তাতে কী! বাস-লরিতে লাগানো রয়েছে অন্য রকমের হর্ন। যা শব্দতাণ্ডবে হার মানাতে পারে এয়ার হর্নকেও। বিভিন্ন মোড়ে বা রাস্তায় যেখানেই সামান্য যানজট হচ্ছে, তারস্বরে সেই হর্ন বাজতে শুরু করছে। কানে আঙুল দিয়ে যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছেন পথচারীরা।
উলুবেড়িয়ার ওটি রোডে আছে একাধিক নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতাল। অথচ ওই রাস্তায় গাড়ির হর্নে কান পাতা দায় বলেই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি
থাকা রোগীদের নাভিশ্বাস ওঠে। উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা জানান, আদালতের ধারেই রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা গাড়ির হর্নে মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলাই দায় হয়।
শুধু নার্সিংহোম বা আদালত নয়, বিপাকে পড়ে স্কুলগুলিও। বাগনান ওটি রোড, স্টেশন রোডের ধারে আছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্কুল। ওই হর্নের দাপটে করোনা পরিস্থিতির আগে স্কুলের পঠনপাঠনেও সমস্যা হত বলে অভিযোগ শিক্ষকদের একটা
বড় অংশের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুধু এয়ার হর্ন নয়। অনেকেই মোটরবাইকের সাইলেন্সর খুলে রেখে বাইক চালান। ফলে বিকট শব্দ করে বাইকগুলি ছুটতে থাকে। এই ধরনের শব্দদূষণের প্রতিবাদে একাধিকবার সোচ্চার হয়েছে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা একাধিক সংগঠন। কিন্তু তাতেও ওই শব্দ-দৌরাত্ম্যে লাগাম পরানো যায়নি বলে অভিযোগ।
কী বলছে পুলিশ?
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দাবি, এয়ার হর্ন বাজানোর জন্য জরিমানা করা হয়। তবে অভিযান যে নিয়মিত হয় না, সেটাও মেনে নিয়েছে পুলিশ। ‘নো হর্ন’ বোর্ড না থাকার প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য, মুম্বই রোডের ক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সড়কের ক্ষেত্রে রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের বিষয়টি দেখার কথা। তাদের
সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দেন গ্রামীণ জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা।