অব্যবস্থা: জরুরি বিভাগের সামনে সহকারী সুপার মৃন্ময় চক্রবর্তীকে ঘেরাও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। ছবি: তাপস ঘোষ।
ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ লাইন ফেটে যাওয়ায় রবিবার সকাল থেকে প্রায় ছ’ঘণ্টা অস্ত্রোপচার বন্ধ রইল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে। তার জেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রসূতিদের আত্মীয়েরা। খবর পেয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা হাসপাতালে এসে জরুরি বিভাগের সামনে সহকারী সুপার মৃন্ময় চক্রবর্তীকে ঘেরাও করে কৈফিয়ত তলব করেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা হয়।
বেলা একটা নাগাদ পাইপ লাইন সারানোর কাজ সম্পূর্ণ হলে বন্ধ হওয়া অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ফের চালু হয়। পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। পরিস্থিতির জেরে ছুটির দিনেও হাসপাতালে উপস্থিত হন সুপার অমিতাভ মণ্ডল। তিনি বলেন, "একটা দুর্ঘটনা ঘটে পাইপ ফেটেছিল। ফাটার পর থেকে সারানোর কাজ শুরু হয়েছিল। সমস্যা মিটেছে। তবে এ জন্য কোনও প্রসূতির কোনও ক্ষতি হয়নি।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখানে দু’টি ওটি আছে। একটি দোতলার প্রসূতি বিভাগে। অন্যটি একতলায় অন্যান্য অস্ত্রোপচারের জন্য ব্যবহার হয়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী হাসপাতালে নতুন একটি ইউনিট নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলছিল। এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ সেই কাজ চলাকালীন ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ ফেটেই বিপত্তির সূত্রপাত।
কিন্তু আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রসূতিদের জন্য কেন অন্য ওটি ব্যবহার হল না, এই প্রশ্নেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁদের আত্মীয়েরা। বিজেপি নেতা অজয় মোহান্তি বলেন, ‘‘ভাবতে অবাক লাগে, জেলা হাসপাতালে সামান্য জলের অভাবে এতক্ষণ ওটি বন্ধ থাকতে পারে! কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত।’’
হাসপাতালের এক কর্তা জানান, প্রসূতিদের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন হয়। অন্য ওটিতে সেই ব্যবস্থা না-থাকায় সেখানে অস্ত্রোপচার করা যায়নি।
শুরুতে অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকার কথা শুনে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন প্রসূতি এবং তাঁদের আত্মীয়েরা। তাঁদের মধ্যে চুঁচুড়ার সিংহীবাগান এলাকার বাসিন্দা নন্দিতা সমাদ্দার শনিবার গভীর রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে এই হাসপালে ভর্তি হন। তাঁর দিদি সঙ্গীতা ব্যাপারী বলেন, ‘‘ভর্তির পর থেকে বোন যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ চিকিৎসক এসে বলেন, অস্ত্রোপচার করাতে হবে। কিন্তু ওটি বন্ধ থাকায় আমরা চরম দুশ্চিন্তায় ছিলাম। দুপুর একটার পর অস্ত্রোপচার করে বোনের ছেলে হয়। দু’জনেই সুস্থ আছে শুনে স্বস্তি পেলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy