Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Chandannagar

জলসঙ্কট অব্যাহত, ক্ষোভ নানা ওয়ার্ডে

চন্দননগরের একাধিক ওয়ার্ডের এই জলছবি এখনও পাল্টাল না। গত পুর নির্বাচনের ইস্তাহারে পর্যাপ্ত পরিস্রুত পানীয় জলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল।

বোড়াইচণ্ডীতলায় পানীয় জলপ্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে । নিজস্ব চিত্র

বোড়াইচণ্ডীতলায় পানীয় জলপ্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে । নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ঘোষ
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৯
Share: Save:

কোথাও কল খুলে বসে থাকতে হয়, কখন ঘোলা জল পরিষ্কার হবে!

কোথাও সরু সুতোর মতো জলে বালতি ভরতেই চলে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়।

চন্দননগরের একাধিক ওয়ার্ডের এই জলছবি এখনও পাল্টাল না। গত পুর নির্বাচনের ইস্তাহারে পর্যাপ্ত পরিস্রুত পানীয় জলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। ভোটে জেতার পরে তৃণমূলের পুরবোর্ড প্রায় এক বছর কাটিয়ে দিল। কিন্তু জলসঙ্কট মিটল না। বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, ঘোলা জলে পেটের রোগের ভয়। সে জন্য জল কিনে খাচ্ছেন।

আগেও একাধিকবার জল নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন জলপ্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া সময়ের অপেক্ষা। অচিরেই সমস্যা মিটবে। সেই আশ্বাসই ফের মিলেছে। মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নতুন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। জল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সরকারি তরফে সবুজ সঙ্কেত মিললেই জল সরবরাহ চালু করা হবে।’’

জলের সমস্যা আগের চেয়ে অনেক মিটেছে বলেও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি। দিনের পর দিন জলযন্ত্রণা ভোগ করা মানুষজন অবশ্য তিতিবিরক্ত। শহরের ১১, ১৬, ১৭, ২১ এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে জলকষ্ট রয়েছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তারানাথ ভট্টাচার্য লেনের বাসিন্দা সোমা নন্দীর অভিজ্ঞতা, ‘‘প্রায় দিনই সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জল উধাও। পড়লেও সরু সুতোর মতো। কাজে বেরোনোর তাড়ার সময় কলে জল না পড়লে অবস্থা কেমন হয়, বুঝুন।’’

একই কথা জানান চালকেপাড়ার অভিজিৎ ওঝা, অমরনাথ মুখোপাধ্যায়, বেনেপাড়ার সুনীল কুমার দে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরশ্রী, অশোকপল্লির বাসিন্দাদেরও ক্ষোভ, পর্যাপ্ত জল মেলে না। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের চুনাগলি, খানসামাপাড়া, কুঠিরঘাট প্রভৃতি জায়গার বাসিন্দারাও জলকষ্টে ভুগছেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেপাড়া, ছুতোরপাড়া, ব্যানার্জিপাড়ায় নিত্যদিন ঘোলাজলের সমস্যা। অনেকেই জানান, পরিষ্কার জলের আশায় কল খুলে হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়।

বাসিন্দাদার একাংশের অভিযোগ, কিছু জায়গায় পাম্প চালিয়ে পুরসভার পাইপলাইন থেকে জল চুরি হচ্ছে। ফলে, সমস্যা বাড়ছে। জলকল বিভাগের মেয়র-পারিষদ হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় জানান, এই অভিযোগ তাঁদের কানেও রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘জল চুরির ঘটনা জানতে পেরেছি। গোপনে সন্ধান চালানো হচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

জলকল বিভাগ সূত্রের দাবি, গত এক বছরে জলের সঙ্কটের অভিযোগ পেলেই সেই জায়গায় পাইপলাইন পরিষ্কার করা হয়েছে। এতে আগের তুলনায় সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। নতুন জলপ্রকল্পে কয়েকটি জায়গার পাইপলাইনের সংযোগ শুধু বাকি। মাধ্যমিক পরীক্ষা মিটলেই হয়ে যাবে।

হিরণ্ময় বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। যে সব জায়গায় সরু পাইপ আছে, সেগুলি বদলের কাজ দ্রুত শুরু হবে। নতুন জলপ্রকল্পের বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। ওই প্রকল্প চালু হলেই সমস্যা থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Drinking Water Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE