Advertisement
E-Paper

‘সব দরজা-জানলা বন্ধ করেও টেকা যাচ্ছিল না’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিষয়টি অনুসন্ধান করে। নিয়ন্ত্রিত ভাবে ছোট বক্স বেজেছে। ডিজে বাজেনি। দু’পক্ষের গোলমাল পুলিশ এবং পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থলে গিয়ে মিটিয়ে দেন।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:০২
Picture of the people celebrating during the immersion of Saraswati Puja.

তাণ্ডব: চণ্ডীতলার বাকসায় ডিজে বক্স বাজিয়ে সরস্বতী পুজোর বিসর্জন। নিজস্ব চিত্র

সরস্বতীর পুজোর শুরু থেকে শেষ— হুগলি জেলার নানা জায়গায় শব্দের তাণ্ডব চলল।

চণ্ডীতলার বাক্‌সায় সোমবার রাতে একটি পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায় লাগামহীন ভাবে ডিজে বক্স বাজানোর অভিযোগ ওঠে। সঙ্গে ছিল উদ্দাম নাচ। এক গ্রামবাসীর ক্ষোভ, ‘‘ভ্যানের উপরে ৩-৪টি বক্স বাজছিল। দরজা-জানলা বন্ধ করেও টেকা যাচ্ছিল না। মানুষের ক্ষতি করে এ কেমন আনন্দ!’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুজোয় বিভিন্ন পাড়ায় টুকটাক বক্স বেজেছে। রবিবার বিসর্জনেও বেজেছে। ততটা সমস্যা হয়নি। সোমবার যেন তাণ্ডব চলল!’’ গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, বিভিন্ন পুজোয় তারস্বরে বক্স বাজানোই রীতি। বক্স ব্যবহারকারীরা নাম জেনে পাছে হামলা চালায়, এই ভয়ে থানায় জানাতে তাঁরা ভয় পান।

দাদপুরের মাকালপুরে একটি পুজোয় পাঁচ দিন ধরে জোরে বক্স বাজে বলে স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার এখানে জোরে বক্স বাজাতে নিষেধ করে পুলিশ। ডিজে ও বাজিবিরোধী মঞ্চের অভিযোগ, এক শিক্ষক-দম্পতি পুলিশে নালিশ করেছেন, এই সন্দেহে সোমবার সন্ধ্যায় কিছু লোক তাঁদের বাড়িতে হামলার উপক্রম করে। তখন ছাত্রছাত্রীরা দম্পতির বাড়িতে পড়ছিল। গালিগালাজ শুনে দম্পতি রুখে দাঁড়ান। বচসা হয়। পরে তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করে বাজি ফাটানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।

গৌতম সিংহরায় নামে ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘পাঁচ দিন ধরে ক্রমাগত প্রচণ্ড জোরে বক্সের দাপটে কষ্ট পেয়েছি। পুলিশ নিষেধ করায় ওদের সন্দেহ, আমরা থানায় জানিয়েছি। হামলার চেষ্টা করে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিষয়টি অনুসন্ধান করে। নিয়ন্ত্রিত ভাবে ছোট বক্স বেজেছে। ডিজে বাজেনি। দু’পক্ষের গোলমাল পুলিশ এবং পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ঘটনাস্থলে গিয়ে মিটিয়ে দেন। হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের দাবি, সর্বত্রই অভিযোগ পেলেই বক্স বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

শিল্পাঞ্চলে চন্দননগরের জেলেপাড়ায় একটি পুজোয় ৩-৪ দিন ‘শব্দ-সন্ত্রাসে’ পাড়া-পড়শি নাকাল হয়েছেন। রবিবার প্রতিমা বিসর্জন হয়। এ ক্ষেত্রে শব্দের প্রাবল্য নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন, পুরসভার কর্তাব্যক্তিদের কাছে নাগরিক সংগঠনের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। এলাকাবাসী জানান, পুলিশ একাধিক বার গিয়ে পুজো-উদ্যোক্তাদের নিষেধ করে জোরে বক্স বাজাতে। পুলিশ চলে গেলে ফের বিকট আওয়াজে বেজেছে।

রবিবার শ্রীরামপুরে ধর্মতলা এলাকায় বিচিত্রানুষ্ঠানে রাত অন্তত ১১টা পর্যন্ত জোরে বক্স বেজেছে। স্থানীয় পুলিশের বক্তব্য, থানায় এমন কোনও অভিযোগ আসেনি।

ডিজে ও বাজিবিরোধী মঞ্চের সদস্যদের খেদ, শব্দের মাত্রা এবং সময়সীমা লঙ্ঘন করে বক্স বাজানো হলে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু নেয় না। অভিযোগ পেলে বক্স বন্ধ করে দায় সারে। তা-ও সব ক্ষেত্রে নয়। বক্স বাজেয়াপ্ত বা ধরপাকড় করে না।

হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় ডিজে অনেকটা নিয়ন্ত্রিত ছিল। সরস্বতী পুজোয় চণ্ডীতলা, হরিপাল, জাঙ্গিপাড়ায় জোরে গান বেজেছে, শুনেছি। অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। তবে, পুরোপুরি বন্ধের জন্য কঠোর পদক্ষেপ দরকার। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব।’’

Saraswati Puja 2023 Sound pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy