পঞ্চায়েত প্রধানের ‘আপত্তিকর ভিডিয়ো’ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। তার পর থেকে আর পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যাচ্ছেন না তিনি। অন্য দিকে, তাঁর অনুপস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন এলাকার মানুষ। কেউ মেয়ের বিয়ের আগে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেন না। কেউ অন্য কোনও শংসাপত্র নিতে গিয়েও পাচ্ছেন না। ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের। কপালে ভাঁজ পঞ্চায়েত সদস্যদের। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের একটি পঞ্চায়েতে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মাসখানেক আগে হাওড়ার ওই পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানের একটি ‘আপত্তিকর’ ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। তাই নিয়ে জোর হইচই শুরু হয় এলাকায়। পঞ্চায়েতের অন্দরে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। বাইরে পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে মশকরা করছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে এক মাস ধরে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে যাচ্ছেন না প্রধান। তিনি কোথায়, বলতে পারছেন না (বা চাইছেন না) দলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে গিয়ে তাঁরা পরিষেবা পাচ্ছেন না। কারও মেয়ের বিয়ে সামনে। কিন্তু ‘রূপশ্রী’র জন্য আবেদন করতে পারছেন না। কেউ আবার আবাসিক শংসাপত্র (রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট) আনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরছেন। ওই পঞ্চায়েত এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত তো লাটে উটেছে। পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রামেই দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আমরা যাব কোথায়?’’
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যেরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার অঞ্চল সভাপতি জাফর মোল্লা বলেন, ‘‘অবিলম্বে প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ মানুষের হয়রানির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জন কুন্ডু। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা লিখিত ভাবে বিডিও-র কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার কপি বিডিও হাতেও পেয়েছেন বলে শুনেছি।’’ বিডিও উৎপল দাস মুহুরি জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতে সদস্যদের নিয়ে দ্রুত সাধারণ সভা হবে।
আরও পড়ুন:
পঞ্চায়েতের এই সমস্যার কথা রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়ের কানে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে মানুষের পরিষেবা পাওয়া উচিত। সেটা বন্ধ হওয়া উচিত নয়। তবে ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করাও প্রয়োজন।’’