দিন দুই ধরে ক্রমাগত দিদির নম্বর ডায়াল করেছেন। কিন্তু প্রত্যেক বার মোবাইল বন্ধ পেয়ছেন। জামাইবাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁকেও পাননি সালাহউদ্দিন। একবুক আশঙ্কা নিয়ে দিদির শ্বশুরবাড়ি, শ্রাবস্তীতে গিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু দরজায় তালা!
প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সালাহউদ্দিন শোনেন, লখনউ বেড়াতে গিয়েছেন দিদি-জামাইবাবু। তা বলে ফোন ধরবেন না? কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সন্ধ্যার সময় জামাইবাবু দেখা পেলেন যুবক। দিদির কথা জিজ্ঞাসা করতেই আমতা-আমতা করেন জামাইবাবু। সন্দেহ হয় যুবকের। সটান থানায় যান তিনি। পুলিশ সালাহউদ্দিনের জামাইবাবুকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার দু’দিন পরে ওই যুবক জানালেন স্ত্রী কোথায়। তাঁর বিবরণ শুনে থ হয়ে গেল পুলিশও!
মাস দুয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের মেরঠে প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে কুচি কুচি করে কেটে ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে দিয়েছিলেন স্ত্রী। মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের খুনের ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল সারা দেশ। এ বার উত্তরপ্রদেশের শ্রাবস্তী জেলার বাসিন্দা স্ত্রীকে খুন করে টুকরো টুকরো করলেন স্বামী। প্রমাণ লোপাট করার জন্য স্ত্রীর দেহাংশের কিছুটা ছুড়ে দেন খালে। বাকিটা রাস্তার ধারে ধারে। প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে ওই ভাবে দেহাংশ ছুড়তে ছুড়তে গিয়েছেন তিনি!
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম সইফউদ্দিন। লখনউ বেড়াতে যাওয়ার নাম করে স্ত্রী সাবিনাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেন তিনি। তার পর দেহ টুকরো টুকরো করে ছুড়ে ফেলেন বিভিন্ন জায়গায়। গত ১৪ মে সাবিনার খোঁজে তাঁর বাড়িতে যান ভাই সালাহউদ্দিন। তার পরেই জানা গেল সাবিনার হত্যার কথা।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৫ বছরের সাবিনাকে পণের জন্য খুন করেছেন ৩১ বছরের স্বামী। মৃতার ভাই দিদির খোঁজ না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে সাবিনার স্বামীকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু বার বার তিনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার তিনি স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেন। অভিযুক্ত জানান, লখনউ যাওয়ার পথে সাবিনাকে তিনি খুন করেছেন। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে যত্রতত্র ফেলেছেন। শুধু তা-ই নয়, স্ত্রীর বাঁ হাতের টুকরো পুড়িয়ে বাগানে লুকিয়েছিলেন!
আরও পড়ুন:
ইতিমধ্যে মৃতার দেহের কিছু অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতার বাঁ হাতের একাংশ উদ্ধার করার পরে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামীকে। শনিবারই তাঁকে আদালতে হাজির করানোর কথা।
সাবিনার বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাদের মেয়ের উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার করতেন স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সাবিনার ভাই বলেন, ‘‘পণের জন্যই আমার দিদিকে মেরে ফেলেছে লোকটা। আমরা বাগানে দিদির হাতের টুকরো পেয়েছি। গত ১৪ মে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। ওর (সইফউদ্দিনের) কঠোর শাস্তি চাই।’’