Advertisement
E-Paper

Laxmi Puja: লক্ষ্মীপুজোয় মুসলিমরাও মাতেন পশ্চিম খালনায়

কোনও ডেকরেটর নয়, জয়পুরের পশ্চিম খালনায় ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের লক্ষ্মীপুজোর মণ্ডপ গড়ছেন উদ্যোক্তারাই।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৪৯
মণ্ডপ তৈরিতে হাতে হাত দুই সম্প্রদায়ের মানুষের।

মণ্ডপ তৈরিতে হাতে হাত দুই সম্প্রদায়ের মানুষের। নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টির বিরাম নেই। রাজস্থানে বসে উদ্বেগ বাড়ছে শেখ রাজেশের। গ্রামে লক্ষ্মীপুজোর মণ্ডপটা সময়মতো শেষ করা যাবে তো!

কোনও ডেকরেটর নয়, জয়পুরের পশ্চিম খালনায় ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের লক্ষ্মীপুজোর মণ্ডপ গড়ছেন উদ্যোক্তারাই। সেখানে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাও আছেন। শেখ রাজেশ ওই পুজো কমিটিরই সভাপতি।

পেশাগত কারণে এখন রাজস্থানে আছেন রাজেশ। কিন্তু মন পড়ে আছে নিজের গ্রাম পশ্চিম খালনায়। কাল, বুধবার পুজো। তার আগেই তিনি ফিরে আসবেন। সোমবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর গলায় ধরা পড়ল উদ্বেগ, ‘‘খবর পেয়েছি খালনায় বৃষ্টি হচ্ছে। মোবাইলেই সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ এখান থেকেই দিচ্ছি। ফিরে ওখানে পুজোর বাকি কাজ সারব।’’

খালনায় প্রচুর লক্ষ্মীপুজো হয়। সেই কারণে এই গ্রাম জেলায় ‘লক্ষ্মীর গ্রাম’ হিসেবেও পরিচিত। পুজোয় এখানকার প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয়-পরিজনেরা আসেন। ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজোর পাশাপাশি বারোয়ারি পুজোর জাঁক হার মানায় দুর্গাপুজোকেও। এখানকার আর একটি বৈশিষ্ট্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। শুধু ‘আমরা সবাই’-এর পুজোতেই নয়, একাধিক পুজো কমিটির বিভিন্ন পদে রয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। পুজো আয়োজনে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা। পুজোয় তাঁদের বাড়িতেও আত্মীয় সমাগম বাদ যায় না।

‘আমরা সবাই’-এর পুজো এ বার ৩২ বছরে পড়ল। থিম ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক গণেশ করাতি বলেন, ‘‘আমরা এখানে যুগ যুগ ধরে হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বসবাস করি। একে অপরের সুখ-দুঃখে পাশে থাকি। মুসলিমদের মহরমে যখন তাজিয়া বেরোয়, আমরা তাঁদের সঙ্গে থাকি। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনও লক্ষ্মীপুজোর সময়ে আমাদের সঙ্গে থাকেন। আমাদের এখানে এটা বিরল ঘটনা নয়।’’ রাজেশের কথায়, ‘‘এই পুজো যত বছর ধরে হচ্ছে, তত বছর ধরেই আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন যুক্ত আছি।’’ তাঁর বাবা-ভাইয়েরাও এই পুজোর আয়োজনে যুক্ত বলে জানান রাজেশ।

করোনা আবহে সব পুজোরই বাজেট ও জাঁক কমেছে। কিন্তু তাতে সম্প্রীতিতে ছেদ পড়েনি। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল মনে করেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রে খালনা অনেককে পথ দেখাতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর বিসর্জনের জন্য মুসলিম সম্প্রদায় স্বেচ্ছায় তাঁদের উরসের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে, এমন ঘটনাও এখানে ঘটেছে। আমি নিজে তাঁর সাক্ষী।’’ আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেলওয়ার হোসেন মিদ্দার কথায়, ‘‘পুজোকে কেন্দ্র করে খালনার এই সম্প্রীতি তুলনাহীন।’’

এই এলাকার বহু লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে জড়িত আমতার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রীতি রক্ষায় বাংলার যে ঐতিহ্য, তা হাতেক‌লমে করে দেখাচ্ছে খালনা। বহু বছর ধরে এখানে এই চর্চা হয়ে আসছে।’’

Laxmi Puja 2021 Muslim hindu Religious Harmony
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy