দড়ি ধরে ভেলায় চেপে এ ভাবেই চলে যাতায়াত। — নিজস্ব চিত্র।
বর্ষাকালে এই এলাকা জলে ভাসে। দরকারে ঘর থেকে বের হওয়াই দায় হয়। আবার গ্রীষ্মেও রেহাই নেই। বাড়ি থেকে ভেলা চেপে পৌঁছতে হয় মূল রাস্তায়। বেহাল নিকাশির এমনই অবস্থা সাঁকরাইলের হাওয়াপোতার হাজি এস টি মল্লিক হাসপাতালের পিছনের ১৪২ নম্বর বুথ এলাকার।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ভোটের সময় প্রার্থীরা এসে গালভরা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোট মিটলেই আর কারও দেখা মেলে না। বিশেষত যে গোটা দশেক বাড়ির সামনে পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ, সেখানে ওই ভেলায় চেপেই প্রচারে আসেন প্রার্থীরা। বার বার প্রত্যাখ্যাত হতে হতে বিরক্ত এলাকাবাসীর অনেকেই এ বার ভোট দেবেন না বলে ভাবছেন।
বিষয়টি শুনে সাঁকরাইলের বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার বলেন, ‘‘সাঁকরাইল ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় জল জমার সমস্যা আছে, এটা ঠিক। অপরিকল্পিত ভাবে বসতি গড়ে ওঠাই মূলত সমস্যার বড় কারণ। তবে ওই এলাকার এমন পরিস্থিতি জানতাম না। এলাকায় গিয়ে বিষয়টি দেখব।’’
সাঁকরাইলের হাওয়াপোতার ওই ১৪২ নম্বর বুথ এলাকায় বসবাস করেন প্রায় আড়াইশো বাসিন্দা।তাঁরা জানান, সারা বছর জলেই যেন বাস। দাবদাহের সময়েও জলপেরিয়ে বাজার-দোকানে যেতে হয়। এর মধ্যে একটা অংশের অবস্থা ভয়াবহ। গোটা দশেক বাড়িরসামনে থেকে মূল রাস্তায় ওঠারআগের ৫০-৬০ ফুট অংশ জলে ডুবে থাকে। শাজাহান মল্লিক নামেএক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওই ভেলায় বসে দড়ি ধরে টেনে এগোতে হয়। দিনের পর দিন এ ভাবে যাতায়াত সম্ভব?’’ মন্টু মল্লিক,আনসার মল্লিক নামে আরও দু’জনের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের এলাকাটা নিচু। পাথরঘাটা, রামচন্দ্রপুর, চাঁপাতলার জল এখানে নামে। নালা দিয়ে ঠিক করে জল বেরিয়ে গেলে কিন্তু সমস্যাটা থাকত না। কিন্তু সেটাই হয় না। আমাদের অবস্থার বদল না হলে ভোট দিয়েকী করব?’’
নিকাশি সমস্যা মেটানোই এ বার এলাকার প্রার্থীদের মূল বার্তা। সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নন্দলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই এলাকায় নিকাশি, পানীয় জল, রাস্তার সমস্যা রয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এলে ধীরে ধীরে সবের হাল ফেরানো হবে।’’
এখানে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন কংগ্রেসের মহিমা সর্দার। তিনি জানান, আগে ওই এলাকার নালাগুলি সংস্কার করানো হত। ফলে জল দ্রুত নামত। এখন সেই কাজ না হওয়াতেই বিপত্তি।
এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতের বিদায়ী তৃণমূল প্রধান প্রদ্যোৎ পাল বলেন, ‘‘ওই এলাকাটি নিচু। সে কারণেই জল নামতে দেরি হয়। নিকাশি নালা নিয়মিত সাফ করা হয়। এখনও নালা সংস্কার চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy