হাড়িপুকুর মাঠের বর্তমান হাল। নিজস্ব চিত্র
টানা তিন বছরেরও বেশি খেলাধুলো বন্ধ। সংস্কারের কাজে লাগানোর নামে মাঠের মাঝেই জায়গায় জায়গায় ছোটোখাটো টিলার উচ্চতায় মাটির ঢিবি। ঘাসের উচ্চতা বেড়ে ফুট দেড়েক। ফুটবল আর শীতের রোদে জমাটি ক্রিকেট ম্যাচের উপায় নেই। হুগলির উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাঁড়িপুকুর মাঠের অবস্থা এমনই বেহাল।
মাঠটি পুরসভার হাতে রয়েছে। বিরোধী সিপিএমের হাত থেকে এ বারের পুরভোটে ওয়ার্ডটি শাসক দল তৃণমূলের পকেটে এসেছে। কিন্তু মাঠের হাল ফেরেনি। এলাকার এক প্রবীণ শিক্ষকের ক্ষোভ, ‘‘বাম আমল থেকে শুরু হয়ে গত এক দশকে পুর-এলাকা ইটের জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। এক সময় এই মাঠে মহকুমা ফুটবলও হত। পুরসভার অন্য মাঠ দুটিতে সারা বছর মেলা, পুজো লেগে থাকে। মোটরবাইকের জন্য আমাদের মতো প্রবীণদের রাস্তায় হাঁটার জো নেই। চিকিৎসকের নির্দেশ, ‘দরকারে মাঠে হাঁটুন’। এই মাঠে হাঁটা যায়? এই মাটির ঢিবিতে!’’ অভিযোগ, এক-আধ দিন নয়, এই পরিস্থিতি ২০১৯ সাল থেকে।
স্থানীয় কাউন্সিলর পার্থ মজুমদার জানান, ২০১৯ সালে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে এলাকার মানুষ মাঠটি সংস্কারের কথা বলেন। এরপরে মাঠ সংস্কারে ২০ লক্ষ টাকা পুরবোর্ড অনুমোদন করে। পার্থর বক্তব্য, ‘‘মাঠে ফেলার জন্য যে মাটি আনা হয়েছে, তার মান অত্যন্ত খারাপ। যে ঠিকাদার ওই কাজ করছেন, তাঁকে খারাপ মাটি না ফেলতে অনুরোধ করি। কেননা, তাতে ভালর থেকে খারাপ হত বেশি। সব মিলিয়ে কাজের গতি থমকে গিয়েছে। চেষ্টা করছি, যাতে দ্রুত সংস্কার হয়।’’
কাউন্সিলর যাই বলুন, স্থানীয়দের বক্তব্য, একটা মাঠ সংস্কার তিন বছরেও না করতে পারার যথাযথ যুক্তি এটি হতে পারে না। এক যুবকের প্রশ্ন, ‘‘টাকা আর ঠিকাদার দুইই তো আছে। তা হলে দীর্ঘসূত্রিতা কেন?’’
পুরসভার বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের প্রবীর কংসবণিক বলেন, ‘‘মাঠটি সংস্কারের জন্য আমরা বহুবার পুর-কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। আসলে, পুরসভার কাজে বিরোধী দলকে গুরুত্বহীন করে রাখা হয় কৌশলে। ওঁদের বোঝা উচিত, মাঠ সংস্কার না করে বাচ্চাদের বঞ্চিত করছে পুরসভা।’’
রাজনীতির ঘোলাজলে মাঠ সংস্কার থমকে, বিরোধীদের অভিযোগ এমনই। এখন দেখার, অপেক্ষার প্রহর আর কত দীর্ঘ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy