E-Paper

চুরিতে অভিযুক্তের বাড়ি দেখে থ পুলিশ

বাড়ির মালিক অমিত দত্তকে চুরির অভিযোগে গত রবিবার ধরে হাওড়ার রাজাপুর থানা। তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালির ভেটকাখালি গ্রামে অমিতকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ০৮:৫৬

—প্রতীকী চিত্র।

মার্বেল বসানো তেতলা বাড়ি। একাধিক ঝাড়বাতি। ঘরে ‘ফলস সিলিং’, মূল্যবান আসবাব, ‘সাউন্ড সিস্টেম’। শৌচাগারে বিরাট বাথটাব। রয়েছে শরীরচর্চার যন্ত্র। দু’টি দামি মোটরবাইক। বাড়ির চারপাশ সিসি ক্যামেরায় মোড়া। চুরিতে অভিযুক্তের বাড়ি দেখে তদন্তকারীরা খানিক স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন, দাবি পুলিশের।

বাড়ির মালিক অমিত দত্তকে চুরির অভিযোগে গত রবিবার ধরে হাওড়ার রাজাপুর থানা। তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালির ভেটকাখালি গ্রামে অমিতকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সেখানে গিয়ে এ সব দেখে তাদের চোখ কপালে ওঠে, দাবি পুলিশের। তবে ধৃতের ছেলের দাবি, ‘‘বাবা গাড়ি চালান। পারিবারিক সূত্রে এবং মামার বাড়ি থেকে পাওয়া টাকায় বাড়ি হয়েছে।’’

তদন্তকারীদের দাবি, রোগাটে গড়নের কাঁচাপাকা দাড়ির মাঝবয়সি অমিত তাদের কাছে কবুল করেছে, চুরি তার পেশা। সে সুবাদেই এই অট্টালিকা। নোদাখালির দক্ষিণ বাওয়ালিতেও একটি বিলাসবহুল ভবন বানিয়েছে অমিত। সেটিতে রেস্তরাঁ করার ইচ্ছে তার। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তার বিস্ময়, ‘‘অঢেল সম্পত্তি। চুরি করে কোটিপতি!’’ পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘‘তদন্তে সবটাই দেখা হচ্ছে। ধৃতের বক্তব্যের সত্যাসত্য যাচাই করা হচ্ছে।’’

পুলিশের দাবি, রবিবার গভীর রাতে রাজাপুরের ঘোষালচক হালদারপাড়ায় একটি বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে ধরা পড়ে অমিত। সোমবার উলুবেড়িয়া আদালত তাকে ছ’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অমিতকে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। এক পুলিশকর্তার অভিজ্ঞতা, ‘‘সরু ঢালাই রাস্তা ধরে প্রায় দু’কিলোমিটার যাওয়ার পরে, ওর ওই রকম বিলাসবহুল বাড়ি!’’

তদন্তকারীরা জেনেছেন, একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা অমিতের আদি বাড়ি কলকাতার মহেশতলায়। সে ভেটকাখালিতে জমি কিনে বাড়ি করে ১৬-১৭ বছর আগে। স্ত্রী, ছেলে, পুত্রবধূকে নিয়ে সংসার। গ্রামে সে ভাবে না মিশলেও, যে কোনও অনুষ্ঠানে চাঁদা দেয়। তবে পাড়া-পড়শিরা জানেন না, সে কী করে। স্থানীয় বাসিন্দা বজবজ ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুচান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ যা বলছে, তা যদি সত্যি হয়, তা হলে অবাক করার মতো ঘটনা। চুরি করে এত!’’

হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার জানান, কিছু দিন ধরে উলুবেড়িয়া এবং রাজাপুরে চুরি-ছিনতাই হচ্ছিল। ওই সব ঘটনার সঙ্গে ধৃতের যোগ আছে কি না, দেখা হচ্ছে। কত দিন ধরে সে চুরি করছে, এত সম্পত্তির নেপথ্যে আর কোনও রহস্য রয়েছে কি না, সে সবও জানার চেষ্টা চলছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Theft Howrah police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy