দু’বছর আগে উলুবেড়িয়ায় বইমেলা উদ্বোধন করতে এসে রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, উলুবেড়িয়া মহকুমা গ্রন্থাগারকে নতুন করে সাজিয়ে জেলার মডেল গ্রন্থাগারে পরিণত করা হবে। কিন্তু মন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি থেকে গিয়েছে খাতায় কলমে। ইতিমধ্যে আরও একটি বইমেলা এসে গেল। কিন্তু উলুবেড়িয়া গ্রন্থাগার থেকে গিয়েছে সেই তিমিরেই।
গ্রন্থপ্রেমীদের উদ্যোগে ‘আনন্দম’ নামে পরিচিত উলুবেড়িয়া মহকুমা গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালে। পরে এটি মহকুমা গ্রন্থাগার হিসাবে স্বীকৃতি পায় ও সরকারি অনুমোদন পায়। তিনতলা এই ভবনে রিডিং রুম, কনফারেন্স রুম সবই আছে। কালীবাড়ির কাছে হুগলি নদীর ধারে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটির পড়ুয়াদের ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো।
ধীরে ধীরে সরকারি ঔদাসিন্যের শিকার হয়ে পড়ে এই গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগারে নেই কোনও স্থায়ী গ্রন্থাগারিক। অন্য গ্রন্থাগারের একজন গ্রন্থাগারিককে সপ্তাহে তিন দিন করে এখানে আসার কথা বলা হয়েছে। বাকি দিনগুলিতে দায়িত্ব সামলান একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তিনিই প্রতিদিন গ্রন্থাগার খোলেন। এই অবস্থায় পাঠকদের সংখ্যা ঠেকেছে হাতে গোনা কয়েক জনে। হাজার বই থাকলেও কর্মী না থাকায় সেগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দুটি কম্পিউটার থাকলেও তাতে ধুলো জমছে।
জেলা গ্রন্থাগার দফতর সূত্রে খবর, বছর দুই আগে হাওড়ায় ২৯ জন গ্রন্থাগারিক নিয়োগ হয়েছিল শুধু গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলির জন্য। সেই তালিকায় উলুবেড়িয়া মহকুমা গ্রন্থাগারের নাম ছিল না। ফলে এখানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ করা যায়নি। গ্রন্থাগারটির এমন দশায় হতাশ এলাকার গ্রন্থপ্রেমীরা।নাট্যকর্মী শ্যামল দত্ত বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়ার সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারিক ও কর্মী নিয়োগ করে এর পুনরুজ্জীবন খুব জরুরি।’’
সপ্তাহের তিন দিন যিনি গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব সামলান সেই রণজিৎ প্রামাণিক অবশ্য দাবি করেন, ‘‘প্রথমে টাকার সমস্যা ছিল। তা মিটেছে। প্রায় সাত লক্ষ টাকার অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। সেই টাকায় মডেল গ্রন্থাগারতৈরির পরিকল্পনা চলছে।’’ কর্মী নিয়োগ নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)