ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাতে না দিলে রাজ্য সরকারকে তা কিনে নেওয়ার দাবি তুললেন ব্যবসায়ীরা।
আলু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশিকা ছাড়াই চার পড়শি রাজ্যের (বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও অসম) সীমানায় আলুবোঝাই ট্রাক আটকে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ৩০ হাজার আলু ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে। অথচ, রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এখনও সাত লক্ষ টন আলু মজুত। ডিসেম্বর মাসে রাজ্যবাসীর খাওয়ার জন্য তার অর্ধেক পরিমাণ আলুই যথেষ্ট। পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের হিমঘর এবং আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব আজ, শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে জরুরি বৈঠকে বসছেন। সেখানেই আগামী কর্মসূচি ঠিক করা হবে।
আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন মূলত হুগলি ও বর্ধমানে উৎপন্ন আলু খেতে অভ্যস্ত। বীরভূম, বাঁকুড়ার আলু এখানে চলে না। ওই মোটা খোলার আলু সে জন্যই ভিন্ রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভিন্ রাজ্যের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক চুক্তি রয়েছে। একান্তই পাঠাতে না দিলে রাজ্য সরকার সমস্ত আলু কিনে নিক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন হিমঘর থেকে বেরোনোর সময় জ্যোতি আলুর কেজি ২৬-২৭ এবং চন্দ্রমুখী ২৮-৩০ টাকায় নেমে এসেছে। সে ক্ষেত্রে সব আলু কিছুটা কম দামে হলেও রাজ্যকে আমরা বেচে দেব। না হলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।’’
রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরোটাই রাজ্য সরকারের নজরে আছে। আলু এবং আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি টাস্ক ফোর্স দেখে। যথাসময়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গের আলু ওই চার রাজ্যে যায়। গত বুধবার থেকে পুলিশ ওই চার রাজ্যে আলুর ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না। ফলে, আলুর ট্রাক ওই সব রাজ্যের সীমানায় দাঁড়িয়ে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক দিন ভাল ঠান্ডা থাকায় ট্রাকে থাকা আলুতে পচন ধরেনি, সেটাই বাঁচোয়া। তবে, চালকদের ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। পরিবহণ খরচও বাড়ছে। একটি ট্রাকে ৫০০ বস্তা (এক বস্তায় ৫০ কেজি) আলু থাকে।
আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্যের সাড়ে চারশোর উপরে হিমঘরে মজুত আলুর অধিকাংশই বেরিয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বরে রাজ্যবাসীর খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত আলু মজুত রেখে বাকিটা তাঁরা অন্য রাজ্যে পাঠাতে চাইছেন। প্রতিদিন হুগলি এবং পূর্ব বর্ধমানের হিমঘর থেকে ৩০টি করে আলুবোঝাই ট্রাক বেরোচ্ছে। বীরভূম, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর থেকে মিলিত ভাবে প্রতিদিন ২০০ ট্রাক আলু বেরোচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)