Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাস প্লাসের সমীক্ষায় গিয়ে হেনস্থা সরকারি কর্মীর, গ্রেফতার

এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘আবাস প্লাস নিয়ে সর্বোচ্চ রাজনীতি করছে শাসক দল। প্রকৃত গরিব মানুষের তালিকায় নাম নেই।

ধৃতকে নিয়ে আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র

ধৃতকে নিয়ে আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আমতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৩০
Share: Save:

আবাস প্লাসের কাজ নিয়ে ক্ষোভ এ বার আমতায়। সমীক্ষা করতে যাওয়া ব্লকের মহিলা আধিকারিক ও একজন কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল প্রকল্পের তালিকাভুক্ত এক মহিলার ছেলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমতা-১ ব্লকের উদং-২ পঞ্চায়েতের পূর্ব গাজিপুরের ঘটনা। নিরাপদ কাঁউলে নামে বছর আটত্রিশের ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার নিরাপদকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে পাঠানো হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে আমতা-১-এর বিডিও অদ্রিতা সমাদ্দারকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি। উলুবেড়িয়ার এসডিও শমীককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ গাজিপুরের শঙ্করী কাঁউলের বাড়িতে আবাস প্লাসের সমীক্ষা করতে গিয়েছিলেন আমতা-১ ব্লকের মৎস্য দফতরের আধিকারিক সোমদত্তা দাশগুপ্ত ও আবাস প্লাসের সমীক্ষা দলের সদস্য শুভদীপ মজুমদার। শঙ্করীকে দেখতে পেয়ে তাঁরছবি তুলেছিলেন শুভদীপ।অভিযোগ, তাতেই রেগে গিয়ে শুভদীপের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে নিরাপদ। বাধা দিতে গেলে নিরাপদ তাদের মারধর করে এবং ওই মহিলা আধিকারিকের গলার সোনার হার ছিনিয়ে নেয়বলে অভিযোগ।

অভিযোগ মানেনি নিরাপদ। তার কথায়, ‘‘মা সন্ধ্যা দিচ্ছিলেন। আচমকা তাঁর ছবি তোলায় আমি প্রতিবাদ করি। ওঁরা কোনও উত্তর না দেওয়ায় আমি ওই লোকটির জামা টেনে ধরি। তখন উনি হেলমেট দিয়ে আমাকে মারেন। আমি হার ছিনতাই করিনি।’’

নিরাপদর মা শঙ্করী বলেন, ‘‘২০১৮ সালে একটা সমীক্ষা হয়েছিল। তাতে আমার নাম ছিল। তখন আমাদের ভাঙা বাড়ি। তারপর জায়গা বিক্রি করে একতলা পাকা বাড়ি তৈরি করে ছেলেরা। সেই বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে আমার ছবি তুলছিল ওরা। আমিও ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমার ছেলে প্রশ্ন করতেই ওরা ওকে মারল।’’

সমীক্ষা না-করে উপভোক্তাদের তালিকা পঞ্চায়েতে জমা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বহিরা পঞ্চায়েতের হেলুপাড়ার একটি ঘরে এক আশাকর্মী, এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে প্রায় তিন ঘণ্টা তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন গ্রামবাসী। পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। আবার বুধবারও এখানকার জমাদারপাড়ায় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সাবির আলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন জনাপঞ্চাশ গ্রামবাসী। তাঁদের অভিযোগ ছিল, তালিকায় তাঁদের অনেকেরই নাম নেই। অথচ, সাবিরের স্ত্রী ও ভাইদের নাম রয়েছে। সাবির দাবি করেন, ওই তালিকা চূড়ান্ত নয়। চার বছর আগের ওই তালিকার উপরে সমীক্ষা চলছে।

এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘আবাস প্লাস নিয়ে সর্বোচ্চ রাজনীতি করছে শাসক দল। প্রকৃত গরিব মানুষের তালিকায় নাম নেই। শাসক দলের নেতাদের কথা শুনতে গিয়ে সরকারি কর্মীরা বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Awas Yojana Amta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE