স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
বিনা খরচে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে রাজ্য জুড়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে। প্রকল্পের সুবিধা পেতে কার্ডের চাহিদাও প্রচুর। ভোট এলে তৃণমূলের তুরুপের তাস হয় এই প্রকল্প। কিন্তু প্রকল্পের উপভোক্তারা যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগও কম নয়।
আরামবাগ মহকুমায় তেমনই বেশ কিছু অভিযোগ সামনে এসেছে। সম্প্রতি রাজ্যের যে ১৪২টি বেসরকারি হাসপাতালকে পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়েছে, তার মধ্যে অবশ্য হুগলির মাত্র একটিই আছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই নার্সিংহোমটি নিজেদের পরিকাঠামোগত কারণে সব পরিষেবাই বন্ধ রেখেছে।
মাসখানেক আগে হৃদরোগ নিয়ে আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন খানাকুলের ঘোষপুরের লিয়াকত আলি খান। তাঁর অভিযোগ, “স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও সাত দিন ভর্তি থাকার পরে ২৬ হাজার টাকা বিল মেটাতে হয়েছে।’’ শহরের অন্য আর একটি নার্সিংহোমে দুর্ঘটনায় জখম পা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাঁকুড়ার ইন্দ্রনীল হাজরা। কার্ড থাকা সত্ত্বেও সাড়ে ৭ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বলে জানালেন তিনি।
আরামবাগের অন্য একটি নার্সিংহোম বাবাকে ভর্তি করান খানাকুলের শিবকুমার বেরা। তাঁর অভিযোগ, “পায়ে বেল কাঁটা ফুটে বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল। আট দিন নার্সিংহোমে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও ৩৫ হাজার ৯২২ টাকা দিতে হয়েছিল।’’
এর উল্টো ছবিও আছে। আরামবাগের কড়ুই গ্রামের রিয়াজউদ্দিন মণ্ডলের পা ভেঙে গিয়েছিল। একটি নার্সিংহোম থেকে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে আরামবাগ ব্লক প্রশাসন সেখানেই তাঁকে ভর্তি করিয়ে বিনা পয়সায় চিকিৎসা নিশ্চিত করে। পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী বলেন, “মাসখানেক আগে শহরের দু’টি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছিলাম। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সতর্ক করা হয়েছে।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে আমরা সজাগ আছি। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। এ রকম অভিযোগ উঠলে আমাদের মহকুমা ও ব্লক স্তরের আধিকারিকেরা সঙ্গে সঙ্গে কমিটি করে তদন্ত করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’’
সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম মালিকেরা অনেকে জানিয়েছেন, সরকারি প্যাকেজের তুলনায় হাসপাতালের খরচ বেশি হওয়া সত্ত্বেও কোথাও কোথায় অনিয়ম হয়েছে। যেমন, অস্থি বিভাগের কথাই ধরা যাক। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যেখানে সামান্য ব্যান্ডেজ করে দিলেই হাড় জোড়া লাগার সম্ভাবনা থাকে, সেখানেও অস্ত্রোপচার করতে হয়। না হলে টাকা পেতে সমস্যা হয় উপভোক্তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy