দুয়ারে বর্ষা। তার আগে নিম্নচাপের পূর্বাভাস। প্রায় প্রত্যেক দিন বৃষ্টি হচ্ছে। সদয় আকাশ জৈষ্ঠ্যের দহন থেকে স্বস্তি দিলেও হাওড়ার উদয়নারায়ণে দামোদরের পারের বাসিন্দাদের ভাবাচ্ছে নড়বড়ে বাঁধ। তাঁদের শঙ্কা, বাঁধ অবিলম্বে মেরামত করা না হলে একটু জোরালো বৃষ্টিতেই জনপদ ভাসবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে সেচ দফতরের কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শাসক দলের স্থানীয় বিধায়কও।
বর্ষা পুরোপুরি নামার আগেই কাজ সম্পূর্ণ করার আশ্বাস দিয়ে সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি, কিছু জায়গায় কাজ চলছে। বাকি অংশে দু’এক দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
গত বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় ডিভিসি জল ছেড়েছিল। তাতে উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের বাঁধ ভেঙে বেশ কিছু জায়গায় বন্যা হয়। বছর ঘুরলেও তার সংস্কার হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁদের ক্ষোভ, কয়েক জায়গায় মেরামত শুরু হলেও কাজ চলছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। কয়েক দিন পরেই বর্ষা নামবে। এ ভাবে কাজ চললে উদয়নারায়ণপুর ফের ভাসবে। এক চাষি বলেন, ‘‘এই এলাকা কৃষিপ্রধান। বন্যা হলে আবারও চাষের ক্ষতি হবে। গত বছরের বন্যার পরে প্রশাসন যদি দ্রুত বাঁধ মেরামত করত, একটু নিশ্চিন্ত হওয়া যেত। সেই উদ্যোগই দেখছি না প্রশাসনের।’’
ঘুরে দেখা গেল, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের ধারে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। মেরামত হয়নি। রাস্তার হাল এমন, গাড়ি দূরঅস্ত, টোটো পর্যন্ত ঢোকার উপায় নেই। মোটরবাইক, সাইকেল পর্যন্ত হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে হয়। উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্যাণ গায়েন জানান, বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলি চিহ্নিত করে সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। সেচ দফতর সংস্কারের কাজ শুরুও করেছে। পঞ্চায়েত সমিতির তরফে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
বিধায়ক সমীর পাঁজার বক্তব্য, গত বছর বন্যার পরেই সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ডিভিরসুট, দক্ষিণ ও পশ্চিম মুনসুকা, কুলটিকারি-সহ সাতটি স্থান (পয়েন্ট) চিহ্নিত করা হয়েছিল। দ্রুত কাজ শুরু করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজ ধীর গতিতে চলছে। সেচ দফতরের ফুলেশ্বর বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (লোয়ার দামোদর কনস্ট্রাকশন) তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, যে সমস্ত জায়গায় বাঁধ বেশি ভেঙেছিল, সেখানে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশে মেরামতির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চলে গিয়েছে। এই সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)