E-Paper

কেউ ত্রাণ শিবিরে, কারও ঠাঁই দোতলা বাড়ির ছাদে

সকালেই খানাকুল ১ ব্লকের কাবিলপুরে মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভাঙে। দুপুরে কাবিলপুর, ঘাঘরপুর ঢুকতে শুরু করে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৩০

Sourced by the ABP

কোনও বাঁধই আর রক্ষা করতে পারল না ডিভিসি-র ছাড়া বিপুল পরিমাণ জল। ফলে, বন্যাপ্রবণ আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসল। গ্রামবাসীদের কারও ঠাঁই হল ত্রাণ শিবিরে, কারও দোতলা বাড়ির ছাদে।

দামোদর এবং তার শাখা মুণ্ডেশ্বরীর নদীর বাঁধ ভেঙে বা উপচে তছনছ হয়েছে মহকুমার পুরশুড়া, খানাকুল ১ ও ২, আরামবাগ এবং গোঘাট ১ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা। বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে বুধবার পুরশুড়ায় যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বুধবার পর্যন্ত আরামবাগ মহকুমা-সহ জেলায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। মোট ১৩৭টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। দুপুরে সেচ দফতরের (নিম্ন দামোদর) জেলা এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, “এখন প্রায় আড়াই লক্ষ কিউসেক জল চলছে দামোদরে। দ্বারকেশ্বর ছাড়া সব ক’টি নদ-নদীর জল চরম বিপদসীমার প্রায় দেড় মিটার উপর দিয়ে বইছে। বাঁধে বেশ কিছু ধস এবং ভাঙন হয়েছে। জল না নামা পর্যন্ত সেই সংখ্যা বোঝা যাবে না।”

সকালেই খানাকুল ১ ব্লকের কাবিলপুরে মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভাঙে। দুপুরে কাবিলপুর, ঘাঘরপুর ঢুকতে শুরু করে। দুপুর থেকেই গ্রামবাসীরা কেউ একতলা থেকে রান্নার গ্যাস-সহ প্রয়োজনীয় নানা সরঞ্জাম দোতলায় তুলে রাখেন, কেউ নিজের একতলার ছাদে বা প্রতিবেশির দোতলার ছাদে ত্রিপলের ছাউনি করে ফেলেন।

ঘাঘরপুরের বাসিন্দা কৈলাস পোড়েল বলেন, “আমার একতলা বাড়ি। জল রাস্তা ছাড়িয়ে উঠোনে উঠেছে। রাতে জল বাড়তে পারে বলে প্রশাসন প্রচার করেছে। আমরা বাড়ির ছাদেই থাকব।” পাশেই গয়ারাম সাঁতরার দোতলা বাড়ি। সকালেই তিনি একতলা থেলে রান্নার গ্যাস এবং প্রয়োজনীয় জিনিস দোতলায় তুলে আনেন। প্রতিবেশীদের থাকার জন্য দোতলার ছাদ ছেড়ে দিয়েছেন।

পুরশুড়ার ডিহিবাতপুর, পশ্চিমপাড়া, হুমাচক, দেউলপাড়া, মির্জাপুর, রসুলপুর, জঙ্গলপাড়া গ্রামেও বহু বাড়িতে জল ঢুকছে। এখানেও গ্রামবাসীরা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন।

পুরশুড়ার শ্রীরামপুর গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ জানান গ্রামবাসী। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের এলাকায় দেখা যায়নি এবং ত্রাণ মিলছে না। তৃণমমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায়কে বলতে শোনা যায়, “পঞ্চায়েত প্রধান বা অঞ্চল সভাপতি কেউ আসেননি?” এক মহিলা জবাব দেন, “কেউ আসেননি।'' মুখ্যমন্ত্রী পরে কামারপুকুর মঠ ও মিশনে গিয়ে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সোমবার থেকে বাঁকুড়ার ক্যাচমেন্ট বেসিন থেকে ছাড়া প্রায় ৮০ হাজার কিউসেক জলে প্লাবিত হয়েছিল আরামবাগ ও গোঘাটের বিভিন্ন জায়গা। তার মধ্যে আরামবাগ শহরের ৮টি ওয়ার্ড এবং আরামবাগ ও গোঘাট ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে জল নেমেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Arambagh Flood Like situation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy