বর্ষায় গঙ্গা ফের আগ্রাসী রূপ নিতে শুরু করেছে বলাগড় ব্লকের জিরাট পঞ্চায়েতের চর খয়রামারি গ্রাম এবং গুপ্তিপাড়ার সূর্যমন্দির এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, গত তিন দিন ধরে চর খয়রামারিতে ৫০০ ফুটের বেশি অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েক দিনে সূর্যমন্দির চত্বর প্রায় ২০০ মিটার ভেঙেছে।
গ্রামবাসীদের খেদ, কেন্দ্র এবং রাজ্য— দুই সরকারই ভাঙন রোধে পাকাপোক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দ্রুত ভাঙন রোধ করা না গেলে ধীরে ধীরে বলাগড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা নদীতে তলিয়ে যাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
বছরের পর বছর ধরে এই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গঙ্গার ভাঙনে জলে মিশেছে চাষের জমি, রাস্তা, বসতবাড়ি, স্কুল। এই ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের (ডুমুরদহ, নিত্যানন্দপুর ১ ও ২, সিজা কামালপুর, জিরাট, সোমড়া ২, গুপ্তিপাড়া ১ ও ২) বেশ কিছু এলাকায় কমবেশি ভাঙনের সমস্যা রয়েছে। পাশের চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের চন্দ্রহাটি ১ ও ২ পঞ্চায়েতেও গঙ্গা ভাঙনপ্রবণ। এই ন’টি পঞ্চায়েতই বলাগড় বিধানসভার অন্তর্গত। সাম্প্রতিক ভাঙনে চিন্তা বেড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের।
জিরাটের উপপ্রধান অশোক পোদ্দার বলেন, ‘‘বছর চারেক আগে হুগলি সেচ দফতর প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যায়ে মাটির বস্তা ফেলেছিল চর খয়রামারিতে। তাতে ভাঙন ঠেকানো যায়নি। দিন পনেরো ধরে সেচ দফতর বাঁশের খাঁচা ফেলছে। তাতেও বিশেষ লাভ হবে বলে মনে হয় না। পাকাপোক্ত এবং স্থায়ী সমাধান করতে কেন্দ্রের সাহায্য প্রয়োজন।’’ গুপ্তিপাড়া ১ পঞ্চায়েতের সদস্য বিশ্বজিৎ নাগ বলেন, ‘‘সূর্যমন্দির চত্বরে ভাঙনের বিষয়টি সেচ দফতরে জানানো হয়েছে।’’
তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, এলাকার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ভাঙন রোধে কিছুই করেনি। বর্তমান তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক মাস আগে বিষয়টি সংসদে তোলেন। তার পরে কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শন করেছে।
হুগলি জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রিনা প্রামাণিকের পাল্টা দাবি, লকেট সাংসদ থাকাকালীন গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে টাকা এসেও ফেরত চলে গিয়েছে। রাজ্য সরকার কোনও কাজ করেনি। তাঁর কথায়, ‘‘ওই কাজ হলে বলাগড়কে ভুগতে হত না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সরকারে এলে সমস্যা মিটে যাবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)