নববধূর প্রতারণার রকম দেখে তাজ্জব এলাকাবাসী। প্রতীকী চিত্র।
মা-মরা মেয়ে। বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এমনই এক পাত্রীর সম্বন্ধ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার দেয়ালদহ গ্রামের সঞ্জিত পালের বাড়িতে এসেছিলেন ঘটক। সম্বন্ধ এসেছিল নদিয়ার চাকদহ থেকে। কয়েক দিন পর ধুমধাম করে বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের মাত্র সাত দিন পরেই পালানোর চেষ্টা করলেন নববধূ। সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিয়েতে পাওয়া যাবতীয় গয়নাগাটি। এ নিয়ে থানার দ্বারস্থ হলেন স্বামী ও তাঁর পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দেয়ালদহ গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিতের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা চলছিল। গত ২০ এপ্রিল চাকদহ থেকে শান্তি বিশ্বাস নামে এক মহিলা ঘটক একটি সম্বন্ধ আনেন সঞ্জিতের বাড়িতে। জানান, পাত্রীর নাম রাখী বিশ্বাস। তাঁকে নিয়েও যান সঞ্জিতের বাড়িতে। পরিবারকে ওই ঘটক জানান, পাত্রীর মা নেই, বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের অন্য কেউ তাকে দেখে না। মেয়েটা অসহায়। সঞ্জিতের পরিবারের এই অসহায়তার কথা শুনে সেই দিনই বিয়ের ব্যবস্থা করে। এর পর গত ২৩ এপ্রিল রবিবারে প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করে বৌভাতের অনুষ্ঠানের আয়োজনও হয়েছিল।
সঞ্জিতের পরিবারের অভিযোগ, বৌভাতের পর থেকেই নববধূর আচরণ তাঁদের ভাল লাগেনি। এর পর বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে বধূ জানান, তিনি ডাক্তার দেখাতে চাকদহ যাবেন। যাবেন ডাক্তার দেখাতে । কিন্তু বিয়েতে পাওয়া সব গয়না নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই সন্দেহ হয় বরের। বউকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তিনি। তার পর যে তথ্য এল তাতে চোখ কপালে উঠল সবার।
তাঁরা জানতে পারেন, আগে একাধিক বিয়ে করেছেন বাড়ির বউ। একাধিক জায়গা থেকে বিয়ে করে সম্পত্তি হাতানোর অভিযোগ আছে তাঁর নামে। এ সব জানতে পেরে বাগদা থানায় বউয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জিত। তার ভিত্তিতে ‘প্রতারক’ নববধূকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করা হয়। শুক্রবার তাঁকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠিয়েছে বাগদা থানার পুলিশ।
অনেকে বলছেন, এ যেন সুবোধ ঘোষের গল্প নিয়ে তরুণ মজুমদারের সিনেমা ‘ঠগিনী’-র বাস্তব প্রতিফলন। এমন অভিনব পন্থায় প্রতারণা দেখে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy