চুরির পর লণ্ডভণ্ড আলমারি দেখিয়ে কান্না গৃহকর্ত্রীর। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির কাজকর্ম শেষে দুপুরে স্নানে গিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। স্নান সেরে দরজা খুলতে গিয়ে কিছুতেই খুলতে পারেননি। প্রথমে ভেবেছিলেন কোনও ভাবে দরজা আটকে গিয়েছে। খানিক চেষ্টাচরিত্র করে প্রৌঢ়া বুঝলেন বাইরে থেকে ছিটকিনি দেওয়া। কিন্তু বাড়িতে তো তিনি একা! কে দরজায় ছিটকিনি দিল? ভাবতে ভাবতে টেনে দরজা খোলার চেষ্টা করেন প্রৌঢ়া। ছিটকিনি ভেঙে শৌচাগার থেকে বেরিয়ে মাথায় হাত তাঁর। দেখেন আলমারি হাট করে খোলা। আসবাবপত্র থেকে বিছানা— সব এলোমেলো। দিনে দুপুরে হুগলির চুঁচুড়ায় গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে চুরির ঘটনায় শোরগোল এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সিসিটিভি দেখে চলছে চোরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা।
চুঁচুড়া থানার কোদালিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈশাখী সরণি এলাকার বাসিন্দা শ্রাবণী গোস্বামী। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে শ্রাবণীর স্বামী সৃজিত সামন্ত কাজে বেরিয়ে যান। বাড়ির পরিচারিকা কাজ সেরে দুপুর ১২টা নাগাদ বেরিয়ে যান। গৃহকর্ত্রীর দাবি, তার পর তিনি বাড়ির মূল দরজায় ছিটকিনি দিয়ে বাড়ি লাগোয়া শৌচালয়ে গিয়েছিলেন স্নান করতে। কিন্তু বেরোতে গিয়ে দেখেন দরজা বাইরে থেকে আটকানো। ডাকাডাকি করে কারও সাড়া পাননি। জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দেন। এক সময় দরজার ছিটকিনি খুলে পড়ে যায়। শৌচাগার থেকে বাইরে বেরিয়ে তিনি দেখেন, বাড়ির মূল দরজা অর্ধেক খোলা। ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখেন আলমারির লকার খোলা। সোনাদানা থেকে নগদ টাকা, সব গায়েব! প্রৌঢ়ার চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। দিনের বেলা বাড়িতে ঢুকে এমন চুরির ঘটনায় সকলেই তাজ্জব।
গৃহকর্ত্রী বলেন, ‘‘বাথরুম থেকে বেরনোর চেষ্টা করে পারছিলাম না। কেউ বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। চিৎকার করি। পরে বেরিয়ে দেখি বাড়ির সব নিয়ে গিয়েছে চোর। আমার মোবাইল থেকে শুরু করে ৭০-৮০ হাজার টাকা, সোনার গয়না সব চুরি হয়ে গিয়েছে।’’
বাবলু সামন্ত নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘আমাদের খুব অবাক লাগছে। প্রশাসন কিন্তু এখানে খুব সক্রিয়। দিনের বেলাতেও পুলিশ গাড়ি নিয়ে টহল দেয়। তার পরেও এ রকম একটা ঘটনা... আশা করছি জলদি ধরা পড়বে চোর।’’ এ রকম ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বিশেষত মহিলাদের মধ্যে। ইন্দিরা সামন্ত নামে আর এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘আমরা খাচ্ছিলাম। চিৎকার শুনে ছেলেকে বললাম, ‘দেখ তো কী হচ্ছে।’ ছেলে এসে বলল, ‘চুরি হয়েছে।’ আমরা তাজ্জব হয়ে গিয়েছি। আমাদের মনে হচ্ছে, পরিচিত কেউ করেছে। দীর্ঘ দিন ধরে কেউ হয়তো ফলো করত। আশা করছি শীঘ্রই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’
ইতিমধ্যে ব্যান্ডেল ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। কোদালিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যত সিসি ক্যামেরা আছে, তার ফুটেজ় সংগ্রহ করে চোরের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy