কয়েক মাস আগে পুলিশি অভিযানের ফলে উদয়নারায়ণপুরের কুলটিকারি ও মুনসুকায় দামোদরে নৌকোয় যন্ত্র বসিয়ে বালি তোলা বন্ধ হয়েছে। পরিবর্তে নৌকায় বালতি করে বালি তুলে পারে মজুত করে তা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাঁদের আশঙ্কা, নির্বিচারে বালি তোলার ফলে নদের বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়বে।
কুলটিকারির এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেও রাতের অন্ধকারে নৌকোয় যন্ত্র লাগিয়ে বালি চুরি হত। তা বন্ধ করেছে পুলিশ। এরপরেও যে ভাবে দিনের বেলাতেই প্রকাশ্যে বালি তোলা হচ্ছে, তাতে দামোদরের গতিপথ বদলে যেতে পারে।’’ অন্য এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘এমনিতেই এখানকার বাঁধ দুর্বল, বন্যায় ভেঙে যায়। পার ঘেঁষে বালি তোলায় আরও বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকে বহু বার জানিয়েও সুরাহা হয়নি।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।’’
স্থানীয়দের দাবি, বাম আমলেও এই কাজ হত। তখন বালি তোলার কারবারিরা সিপিএম নেতাদের কারও কারও ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এখন তাঁদের ঘনিষ্ঠতা তৃণমূল নেতাদের একাংশের সঙ্গে। অভিযোগ, সেই সব নেতাদের মদতেই রমরমিয়ে চলে এই বেনিয়ম। পুলিশের একাংশের সঙ্গেও কারবারিরা যোগাযোগ রেখে চলেন।
বাম আমলে দলের নেতাদের সঙ্গে ওই কারবারিদের সমঝোতার কথা উড়িয়ে জেলা সিপিএম সম্পাদক দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘এরা তখন বিরোধীদের আশীর্বাদ নিয়ে বড় হয়েছে। এখন শাসক দলের আশ্রয়ে এ সব করছে।’’ উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক তথা হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সমীর পাঁজার প্রতিক্রিয়া, ‘‘বালি তোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফের চলছে কি না, খোঁজ নেব। দলে কোনও দুর্নীতিগ্রস্তের ঠাঁই নেই। যারা এ সব করছে, পুলিশকে বলব, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)