Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Fake IT Officer

আয়করকর্তা পরিচয় দিয়ে শ্রীরামপুরে সোনার দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকার গয়না, নগদ লুট, জালে চার

ঘটনার তদন্তে নেমে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ প্রথমে এলাকায় লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে। তাতে গাড়িটি চিহ্নিত করার পর চালককে জেরা করে অভিযুক্তদের সন্ধান পায় পুলিশ।

Image of Serampore PS

হুগলির শ্রীরামপুর থানা। — ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২৩
Share: Save:

নিজেদের আয়কর দফতরের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে হুগলির শ্রীরামপুরে একটি সোনা গলানোর দোকান থেকে লক্ষাধিক টাকার সোনা এবং নগদ লুট করে মালিককে তুলে নিয়ে চম্পট দেন কয়েক জন। তদন্তে নেমে পুলিশ হাওড়া থেকে গাড়ি এবং কলকাতা থেকে অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, আয়কর অভিযানের নামে লোকজনকে লুটপাট করাই ছিল এই চক্রের কাজ।

মঙ্গলবার রাতে শ্রীরামপুরের কুমিরজলা রোডে একটি সোনা গলানোর দোকানে হানা দেন কয়েক জন। নিজেদের আয়কর দফতরের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে বলা হয় তল্লাশি চালানো হবে। দোকানে চিরুনিতল্লাশির পর সোনা ও নগদ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ‘বাজেয়াপ্ত’ করে দোকানের মালিককেও অফিসে ‘হাজির’ করানোর নাম করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। দোকানের কর্মীরা তখনও ভেবেছিলেন সত্যিই আয়কর অভিযান চলছে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফোন করে জানান, তাঁকে দিল্লি রোডে নামিয়ে দিয়ে চম্পট দিয়েছেন তথাকথিত আয়কর আধিকারিকরা। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায়, আয়কর দফতরের আধিকারিক সেজে দোকানে অবাধে লুটপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমেই খুঁটিয়ে দেখে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ। তাতেই চিহ্নিত করা হয় গাড়ির নম্বর।

শ্রীরামপুর থানার পুলিশ হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকা থেকে একটি গাড়ি এবং তার চালককে আটক করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভুয়ো আয়কর আধিকারিকদেরও খোঁজ পায় পুলিশ। গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়। চালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কলকাতার কসবা এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় চার জনকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সাগর কাপ্তে কলকাতার বড়বাজার এলাকায় থাকতেন। পরবর্তী কালে তিনি শহরের আরও কয়েকটি জায়গায় বাড়ি ভাড়া করে থেকেছেন। পুলিশের জালে চার নকল আয়কর অফিসার, আটক গাড়ি।

পেশায় সোনা গলানোর কারিগর সাগরের জানা ছিল এই বাংলায় কোথায় সোনা গলানোর কারবার চলে। নিজে এক সময় সোনা গলানোর কাজ করলেও পরবর্তী কালে নেশার খপ্পরে পড়েন। তাতেই কাজ হারান। মহারাষ্ট্র থেকে এসে যে সমস্ত বাঙালি রাজ্যে সোনার গয়নার কাজ করেন, তার নির্দিষ্ট তথ্য সাগরের কাছে ছিল। টাকা তোলার উদ্দেশে সেই মতো পরিকল্পনা সাজান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, সাগর আগেও এমনই লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন। মাসখানেক আগে কলকাতার বটতলা থানা এলাকাতেও একই ধরনের অপরাধ সংগঠিত করে পালিয়ে গিয়েছিলেন সাগর বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, সোনা গলানোর কাজে কিছু অস্বচ্ছতা থাকে। তাই চুরি-ডাকাতি হলেও দোকানের কারবারিরা সাধারণত পুলিশের দ্বারস্থ হতে চান না। সাগর নেশার টাকা জোগাড়ে তাই তাঁদের নিশানা করতেন, যাতে ধরা পড়লেও থানা-পুলিশ না হয়। যদিও শ্রীরামপুর পুলিশের তৎপরতায় হাজতবাস করতে হচ্ছে তাঁকে। পুলিশ জানিয়েছে, চার জন ধরা পড়লেও এক অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাঁকে দ্রুত ধরে ফেলার ব্যাপারে আশাবাদী পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE