মা বেঁচে আছেন। কিন্তু তাঁর নামে ভুয়ো মৃত্যু শংসাপত্র বার করে ব্যাঙ্ক থেকে পেনশনের যাবতীয় অর্থ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পুত্রের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়ায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, লিলুয়ার চকপাড়ার বাসিন্দা বীণাপাণি দাসের বয়স ৭৮ বছর। দুই ছেলেই চাকরির সূত্রে বাইরে থাকেন। তাঁর দেখভালের জন্য বাড়িতে একজন আয়া রয়েছেন। বীণাপাণির কথায়, ‘‘বড়ছেলে (তাপস দাস) চাকরির সূত্রে হায়দরাবাদে থাকে। ছোটছেলেও (তপন দাস) কাজ করে। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে কাজ করে।’’ বৃদ্ধার অভিযোগ, স্বামী ক্ষীরোদচন্দ্র দাসের মৃত্যুর পর ছোটছেলে অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন তাঁর উপরে। এক বার মারধর করে তাঁর পা-ও ভেঙে দিয়েছিলেন। তা ছাড়া তাঁর পেনশনের জমানো টাকা তুলে নিতেন তপন। সম্প্রতি যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন ছেলে, তা মারাত্মক।
১৯৯৬ সালে বীণাপাণির স্বামী শুল্ক দফতরের চাকরি থেকে অবসর নেন। পেনশন অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের টাকা জমা পড়ে। ২০১৮ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর ওই অ্যাকাউন্টটি স্ত্রীর নামে চালু হয়। সেই থেকে ছোটছেলের নজর ছিল ওই দিকে। পরিবার সূত্রে খবর, বাড়ির বড়ছেলে তাপস বাইরে থাকার কারণে মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সামলাতেন ছোটছেলে। তার পরেই এই ঘটনা।
বীণাপাণির দাবি, তাঁর মৃত্যুর জাল শংসাপত্র দিয়ে ধরা পড়ার আগে নিজের অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে নিয়েছেন ছোটছেলে। অনেক টাকা তুলেও নিয়েছেন। তাঁর পেনশনও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনি বিষয়টি জানার পরে পুলিশের দ্বারস্থ হন।
বৃহস্পতিবার লিলুয়া থানার পুলিশ তপনকে গ্রেফতার করেছে। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে দাদা চক্রান্ত করছে। আমি মায়ের দেখাশোনা করে আসছি। মারধর তো দূরের কথা, কখনও খারাপ আচরণ করিনি।’’
শুক্রবার ধৃতকে হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। পুত্রের গ্রেফতারিতে খুশি হয়েছেন মা। তিনি বলেন, ‘‘ওর কঠোর শাস্তি হোক। আর সরকারের কাছে আবেদন, আমার পেনশন যেন আবার চালু হয়।’’