E-Paper

নবান্ন অভিযান রুখতে পুলিশি ব্যবস্থা, প্রস্তুতি ঐক্য মঞ্চেরও

মঙ্গলাহাটের এক ব্যবসায়ীর করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, কোনও নাগরিকের ব্যবসা বা দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হতে পারে, এমন ভাবে জমায়েত করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ আইনি পদক্ষেপ করতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ০৯:২৬
নবান্ন অভিযান আটকাতে হাওড়ার ফোরশোর রোড-সহ নবান্ন যাওয়ার একাধিক রাস্তায় রাখা হয়েছে গার্ডরেল। রবিবার।

নবান্ন অভিযান আটকাতে হাওড়ার ফোরশোর রোড-সহ নবান্ন যাওয়ার একাধিক রাস্তায় রাখা হয়েছে গার্ডরেল। রবিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

কার্যত সংঘাতের আবহেই আজ, সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, যৌথ মঞ্চ ও সরকারি কর্মচারি পরিষদের নবান্ন অভিযান হতে চলেছে। বেলা ১২টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ওই অভিযান শুরু হওয়ার কথা।

মঙ্গলাহাটের এক ব্যবসায়ীর করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, কোনও নাগরিকের ব্যবসা বা দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হতে পারে, এমন ভাবে জমায়েত করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ আইনি পদক্ষেপ করতে পারে। এর পরেই শনিবার হাওড়া সিটি পুলিশ জানিয়ে দেয়, সোমবারের প্রস্তাবিত ‘নবান্ন চলো’ অভিযান কোনও ভাবেই করতে দেওয়া যাবে না।

তবে ৬ লক্ষ শূন্য পদে নিয়োগ, ২০১৬ সালের এসএসসি-র সকলের ওএমআর শিট এবং নির্ভুল মেধা তালিকা প্রকাশ, সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা প্রদান, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ এবং নারী সুরক্ষার দাবিতে মিছিলের পরিকল্পনা থেকে সরে আসেনি ওই সংগঠনগুলি।রবিবার বিকেলে শহিদ মিনারের কাছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সাংবাদিক সম্মলেন হয়। সেখানে মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন বলেছিল, যে রুটে আমরা এই অভিযান করতে চেয়েছি, তা বাতিল করে অন্য রুটে করতে হবে। হাওড়ার এক ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রুট নিয়ে মামলাও করা হয়। মামলায় রায়ে বলা হয়, নিত্যধন মুখার্জি রোড ধরে মিছিল করা যাবে না। আমরা ওই রাস্তায় মিছিল করছি না। হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন জায়গা থেকে মিছিল শুরু হবে। ফোরশোর রোড ধরে কাজিপাড়া হয়ে নবান্ন বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত যাব।’’ ভাস্কর আরও জানান, শান্তিপূর্ণ মিছিল হবে। তবে পুলিশ যেখানে বাধা দেবে, সেখানেই তাঁরা বসে পড়ে বিক্ষোভ জানাবেন।মিছিলে কমপক্ষে হাজার পাঁচেক মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলেও মঞ্চের দাবি।

এক দিকে আন্দোলনকারীরা যেমন অভিযান সফল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তেমনই তা আটকাতে হাওড়া সিটি পুলিশও প্রস্তুতি শুরু করেছে। পুলিশের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সোমবার জমায়েত করলে তা বেআইনি ঘোষণা করে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মিছিল আটকাতে রবিবার থেকেই শহরের তিনটি জায়গায় ১০ ফুট উঁচু লোহার ব্যারিকেড করা হচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে রেল মিউজ়িয়ামের কাছে। এ ছাড়া, গ্র্যান্ড ফোরশোর রোড ও ফোরশোর রোডের রামকৃষ্ণপুর ঘাট গেট এবং জি টি রোডের বঙ্গবাসী মোড়ের কাছে বসানো হয়েছে লোহা ও কংক্রিটের ব্যারিকেড। একই সঙ্গে, শিবপুর কাজিপাড়ার মোড় ও নবান্নর কাছেও ব্যারিকেড করার জন্য বড় বড় লোহার গার্ডরেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যেরা কোনও ভাবে ওই দুই জায়গায় জমায়েত করলে তা আটকাতেই এই ব্যবস্থা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

অভিযান রুখতে পথে নামানো হচ্ছে প্রায় দু’হাজার পুলিশকর্মীকে। থাকছেন রাজ্য পুলিশ ও হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে তিনটি জলকামান। মিছিল ও জমায়েতের উপরে নজরদারি করতে হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে ১০টি ড্রোন ওড়ানো হবে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর।

শনিবারই হাওড়ার নগরপাল প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, সোমবার নবান্ন অভিযানের অনুমতি পুলিশ দেয়নি। আদালতও শর্ত দিয়েছে। তার পরেও যদি কেউ নবান্ন অভিযানের জন্য জমায়েত করে, সে ক্ষেত্রে তা বেআইনি ঘোষণা করে কড়া আইনি পদক্ষেপ করবে হাওড়া সিটি পুলিশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police Nabanna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy