E-Paper

একাধিক বহুতলের বেআইনি নকশায় পুর অনুমোদন! চাঞ্চল্য হাওড়ায়

দাবি, নবান্নের কাছে ছ’ফুট গলির মধ্যে অবৈধ বহুতলটি ছাড়া আরও যে সব বহুতলের নকশায় পুর আইন না মেনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলিও তদন্ত করে দেখা দরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ০৮:৪০
নবান্নের কাছেই ছ’ফুট গলির মধ্যে বহুতল।

নবান্নের কাছেই ছ’ফুট গলির মধ্যে বহুতল। —ফাইল চিত্র।

শুধু নবান্নের কাছে সরু গলির মধ্যে হালদারপাড়া লেনের অবৈধ বহুতলই নয়। পুর আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হাওড়ার এমন বহু অলিগলিতে একের পর এক বহুতলের নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তা-ও বছর পাঁচেক আগে। বৃহস্পতিবার হাওড়ার পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর ডাকা, বিল্ডিং দফতরের বৈঠকে ওঠা এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুর অন্দরমহলে। ওই বৈঠকে এই অভিযোগ তুলেছেন বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদেরই একাংশ। তাঁদের দাবি, নবান্নের কাছে ছ’ফুট গলির মধ্যে অবৈধ বহুতলটি ছাড়া আরও যে সব বহুতলের নকশায় পুর আইন না মেনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলিও তদন্ত করে দেখা দরকার। পুর চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে।

নবান্নের কাছেই হালদারপাড়া লেনে সরু গলির মধ্যে চারতলা (যদিও অবৈধ ভাবে তৈরি হয়েছে আরও একটি তলা) বহুতলের নকশার অনুমোদন দিয়েছিল পুরসভা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে পুরসভায় শোরগোল পড়ে যায়। বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিকের নির্দেশে রাতারাতি রাস্তা চওড়া করার জন্য ওই বহুতলের পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হয়। এই খবর জেনে পুর আধিকারিকেরা বিল্ডিং দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে পাঠান। তিনি ওই রাস্তার মাপজোক করে পুরসভার ই-ফাইলে বিস্তারিত রিপোর্ট দেন। তাতে তিনি জানান, অনুমোদিত নকশায় ওই গলির মুখ থেকে গোটা গলিটির প্রস্থের মাপ দেখানো হয়েছে সার্বিক ভাবে ৩.৫ মিটার। অথচ, তা আছে মাত্র ২.২ মিটার। ওই গলিতে চারতলা কেন, একটি তেতলা বাড়ি তৈরির অনুমোদনও দেওয়া যায় না।

পুরসভা সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে এই ভাবে হাওড়া পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা বহুতলের ক্ষেত্রে পুর আইন না মেনেই নকশা অনুমোদন করে দেওয়া হয়েছে। ওই সব অধিকাংশ বহুতল তৈরি হয়েছে অবৈধ ভাবে। সেই সব অবৈধ বহুতল ভাঙতে পুরসভা উদ্যোগী না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট তা ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ, তার পরেও বাড়ি ভাঙার কাজে ঢিলেমি দেওয়া হয়েছে। তাই পুর বিল্ডিং দফতরের দুই পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশন তদন্তও শুরু করে। তবে, সেই রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ থেকে ৪ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট গলিতে বহুতল তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের অবিনাশ ব্যানার্জি লেন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অক্ষয় চক্রবর্তী লেন, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের দীনবন্ধু মুখার্জি লেন, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বৃন্দাবন মল্লিক লেন, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাকসাড়া ২ বাইলেন, নবান্ন সংলগ্ন শরৎ চ্যাটার্জি রোড ইত্যাদি রাস্তায় কমপক্ষে ২০টি বাড়ির। এক পদস্থ পুরকর্তা বলেন, ‘‘যে বা যাঁরা এই সব অবৈধ নকশা অনুমোদনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ, এই সব ঘটনায় কলকাতা লাগোয়া হাওড়া পুরসভার সম্মান নিশ্চয় বাড়ে না?’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nabanna howrah municupality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy