Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
agriculture

ফের বৃষ্টিতে চাষে আরও ক্ষতির আশঙ্কা হুগলিতে

গ্রীষ্মকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

মশাটে একটি আনাজের জমিতে জল জমেছে।

মশাটে একটি আনাজের জমিতে জল জমেছে। ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব সংবাদদাতা 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৬:১৪
Share: Save:

ইয়াস বিপর্যয় এবং ভরা কটালের জেরে হুগলিতে চাষে ভালই ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যেই সোম এবং মঙ্গলবার ফের বৃষ্টিতে ক্ষতির বহর বাড়বে বলে চাষিদের আশঙ্কা। জেলার কৃষিকর্তাদের বক্তব্য, আলু বা ধানের মতো প্রধান ফসল এখন মাঠে নেই। সেটা বাঁচোয়া। তবে, গ্রীষ্মকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সিঙ্গুর, হরিপাল, ধনেখালি, তারকেশ্বরের কিছু অংশে প্রচুর পরিমাণে ঢেঁড়স, ঝিঙে, পটল চাষ হয়। চাষিদের একাংশের আশঙ্কা, বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় জল জমে যাওয়ায় গোড়াপচা রোগের সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া ওঠার মুখে বৃষ্টি হওয়ায় তিল চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চণ্ডীতলা, পান্ডুয়া, বলাগড়, আরামবাগ-সহ জেলার বহু এলাকায়। একই ভাবে বাদাম এবং মুগ চাষেও ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়িয়েছে এই বৃষ্টি। তারকেশ্বরের তেঘরি গ্রামের তপন দাসের তিল, পটল এবং মুলো চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বৃষ্টিতে। তিনি তিন বিঘে জমিতে তিল চাষ করেছিলেন। প্রতি কাঠায় খরচ এক হাজার টাকা। কিন্তু ফসল নষ্ট হওয়ায় পুরো টাকাটাই জলে গেল বলে তাঁর আক্ষেপ।

অনেকেই সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। চাষে ক্ষতির ফলে ঋণ শোধ করা নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতে পাট, তিল, মুগকড়াই, হাইব্রিড ঢেঁড়স, ঝিঙে, বরবটি ও করলা জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তাতে ওই সব জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ব্লকের এক কৃষিকর্তা বলেন, ‘‘এখানে ৯৫ শতাংশ জমির বোরো ধান তোলা হয়ে গিয়েছে। তাতে ধান রক্ষা পেয়েছে। তবে, আনাজের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ এলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আরামবাগ মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ জানান, মহকুমায় তিল চাষের এলাকা ছিল ১১ হাজার ৮২৫ হেক্টর। সবটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাদাম চাষের ১০ হাজার ৯১২ হেক্টর জমির মধ্যে ১০ হাজার ৮৭২ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত। ৭৭৫ হেক্টরের জমিতে আনাজ চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ৭১০ হেক্টর জমির চাষের ক্ষতি হয়েছে।

এ দিকে, নিকাশি নালার জল জমিতে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বৈদ্যবাটী চক মৌজায় প্রায় ৩০ বিঘা পাকা বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, ইয়াসে অধিকাংশ ধানগাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে। জমিতে বৈদ্যবাটী ও চাঁপদানি পুরসভার নিকাশি নালার জল ঢুকে যায়। সেই জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বিপত্তি হয়েছে। চাষিরা ধান কাটতে সমস্যায় পড়েছেন। বেশ কিছু কাটা ধান জমিতেই পড়ে রয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক তথা বৈদ্যবাটীর পুরপ্রশাসক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘চাঁপদানির পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

agriculture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE