Advertisement
০২ মে ২০২৪
Karmatirtha

Karma Tirtha: বিক্রি নেই, বন্ধই পড়ে হাওড়ার দুই ‘কর্মতীর্থ’

আমতা রোড বরাবর ২ কিলোমিটারের মধ্যেই নারকেলতলার বড়গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছে তেমনই নীল-সাদা আর একটি ভবন।

উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বড়গ্রামে কর্মতীর্থ ভবন বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বড়গ্রামে কর্মতীর্থ ভবন বন্ধ। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ০৬:৪৯
Share: Save:

উলুবেড়িয়ার আমতা রোড থেকে দেখা যায় নীল-সাদা এই দোতলা ভবনটি। পাঁচ বছর আগে মল্লিকপোলের জগদীশপুরে তৈরি হয়েছিল দোতলা এই ‘কর্মতীর্থ’। ৩২টি দোকানঘর বিলিও হয়েছিল স্থানীয় যুবকদের। এখন সব দোকানঘরই তালাবন্ধ। দোকানদারদের অভিযোগ, বিক্রি নেই। তাই দোকান খোলেন না তাঁরা।

আমতা রোড বরাবর ২ কিলোমিটারের মধ্যেই নারকেলতলার বড়গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে রয়েছে তেমনই নীল-সাদা আর একটি ভবন। পাঁচ বছর আগে ‘কর্মতীর্থ’ নামে এই ভবনেরও উদ্বোধন হয়েছিল। সেখানেরও ৩২টি দোকানঘর এখন তালাবন্ধ পড়ে। সেখানকার দোকানদারদের অভিযোগও একই।

সরকারের উদ্যোগে প্রায় আট বছর আগে রাজ্য জুড়ে চালু করা হয় এই ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্প। প্রকল্পের লক্ষ্য, একাধিক দোকান বিশিষ্ট আধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত একটি বিপণি তৈরি করা। পরে, সে দোকানঘরগুলি এলাকার বেকার যুবকদের মধ্যে বিলি করা হয়, যাতে তাঁরা ব্যবসা করে রোজগার করতে পারেন।

বছর পাঁচেক উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের খলিসানি, জগদীশপুর ও বড়গ্রামে এমনই ‘কর্মতীর্থ’ ভবন তৈরি হয়েছিল। খলিসানিতে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সেই ভবনে বিক্রি ভালই চলছে। কিন্তু জগদীশপুর ও বড়গ্রামের এই ভবন দু’টির ছবি আলাদা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়গ্রামের এক দোকানদারের অভিযোগ, ‘‘আমার শাড়ির দোকান ছিল। কোনও খদ্দেরই আসত না। কাছেই আমতা বাজার। সেখানেই খদ্দেররা যান। তাই দোকান বন্ধ করে এখন দিনমজুরি করছি।’’ জগদীশপুরের অন্য এক দোকানদারের ক্ষোভ, ‘‘রাস্তার ধারে ও’রকম জায়গায় কেন খদ্দের আসবে? পিছনেই তো বড় বাজার। আমি এখন সেখানেই রাস্তার ধারে আনাজ বিক্রি করি। ভালই চলছে।’’

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাঁকা ওই ভবনগুলো এখন দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়েছে। অন্ধকার নামলে সেখানে প্রায়ই মদ-গাঁজার আসর চলে। স্থানীয়দের দাবি, ওই ভবনগুলি চালুর বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। না হলে এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।

অভিযোগ মেনে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তবে দোকানদারদের নিয়েও তাঁদের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এক নেতার কথায়, ‘‘এলাকার বেকার যুবকদের বিনামূল্যে ওই দোকানঘর বিলি করা হয়েছিল। সেগুলো তাঁরা ও ভাবে তালাবন্ধ করে রাখতে পারেন না। সমস্যা মেটাতে বহুবার বৈঠকে ডাকা হলেও, তাঁরা আসেননি।’’

বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সভাপতি অরুণউদয় পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারের শুধুই গালভরা প্রতিশ্রুতি। যে সমস্ত জায়গায় ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্প হয়েছে সেটা ব্যবসা চলার জায়গা নয়। যেখানে-সেখানে প্রকল্প তৈরি করে তৃণমূল নেতারা কাটমানি খেয়েছে। বেকার-সমস্যা আদৌ মিটেছে কি?’’

বিরোধীদের অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ উলুবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি শেখ ইলিয়াস। তিনি বলেন, ‘‘শীঘ্রই ওই দোকানদারদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। যাঁরা আর দোকান খুলতে চান না, তাঁদের থেকে চাবি ফিরিয়ে নিয়ে আগ্রহীদের সুযোগ দেওয়া হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Karmatirtha Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE