Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Murder

সকালে মায়ের সঙ্গে কথা, বিকেলে মেয়ের দেহ মিলল শ্বশুরবাড়িতে, বধূকে খুনের অভিযোগ হুগলিতে

বছর পাঁচেক আগে হিন্দমোটর কোতরংয়ের শাঁখারি লেনের বাসিন্দা সাথী সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কানাইপুরের বড় বহেরার বাসিন্দা সুরজিৎ চৌধুরীর। বুধবার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় সাথীর।

বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য। গ্রেফতার করা হয়েছে বধূর শ্বশুরবাড়ির চার জনকে।

বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য। গ্রেফতার করা হয়েছে বধূর শ্বশুরবাড়ির চার জনকে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৩২
Share: Save:

বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উঠল খুনের অভিযোগ। এই ঘটনা ঘটেছে হুগলির কোন্নগরের কানাইপুর এলাকায়। পুলিশ ওই ঘটনায় আটক করা হয়েছে নিহতের স্বামী-সহ চার জনকে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে হিন্দমোটর কোতরংয়ের শাঁখারি লেনের বাসিন্দা সাথী সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কানাইপুরের বড় বহেরার বাসিন্দা সুরজিৎ চৌধুরীর। সাথীর পরিবারের দাবি, বিয়ের সময় সুরজিৎকে সোনার আংটি, মেয়ের কানের দুল, খাট, বিছানা-সহ নানা যৌতুক দেওয়া হয়। সাথীর মা বাণী সিংহের অভিযোগ, ‘‘বিয়ের সময় নগদ টাকা দিতে পারিনি বলে মেয়েকে নানা রকম গঞ্জনা শুনতে হত। মেয়ের শ্বশুর এবং শ্বাশুড়ি এক লাখ টাকা নগদ চেয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ আমাদের নেই। সেই কারণে মেয়েকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হত শ্বশুরবাড়িতে। সাথীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তখন ও বলে যে, বিয়ের আংটি খুঁজে পাচ্ছে না।’’

সাথীর মায়ের দাবি, তাঁর সঙ্গে মেয়ের শেষ বার কথা হয়েছিল বুধবার সকালে। তাঁর বক্তব্য, সেই সময় সাথী তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি বিয়ের আংটি খুঁজে পাননি। আংটি খুঁজে না পেলে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। বাণীর বক্তব্য, ‘‘বুধবার বিকেলে সাথীর শ্বশুর ফোন করে খবর দেন যে, সে গলায় দড়ি দিয়েছে।’’

সাথীর দিদি রাখি সিংহ বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই ওর উপর অত্যাচার চলত। বিয়ের আংটি হারিয়ে যাওয়ার বোনকে দোষী ঠাউরে অত্যাচার শুরু হয়। ভগ্নিপতিও ফোন করে বলে যে, ‘‘আংটি হারিয়েছে। তা দিতে হবে।’’ সাথীর শ্বশুরও মাঝে মাঝেই হুমকি দিত। ওরা বোনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত।’’ সাথীর মৃত্যুর জন্য তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকেই দায়ী করেছেন রাখিও।

এ নিয়ে উত্তরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ সাথীর স্বামী সুরজিৎ, শ্বশুর মলয়, শ্বাশুড়ি রিনি এবং ভাসুর অভিজিৎকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি, সাথীর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এ নিয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (থ্রি) আলি রাজা বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমরা চার জনকে গ্রেফতার করেছি। আগামিকাল ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।’’ আপাতত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পণ চাওয়া, আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া-সহ নানা ধারায় অভিযোগ দায়ের করে শুরু হয়েছে মামলা। শুরু হয়েছে তদন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE