Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪
Life Jackets

নৌকায় লাইফ জ্যাকেট পরার সরকারি নির্দেশের ‘সলিলসমাধি’

২০১৭ সালের এপ্রিলে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় বাঁশের অস্থায়ী জেটি ভেঙে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যু হয় ২০ জনের। ঠিক তার পরেই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে ইছাপুরে। তারও আগে নদিয়ার শান্তিপুর-কালনা ঘাটের মাঝে গঙ্গায় নৌকা ডুবে মৃত্যু হয় ২২ জনের।

An image of Jacket

—প্রতীকী চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিতান ভট্টাচার্য
ব্যারাকপুর ও তেলেনিপাড়া শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৪:৫৫
Share: Save:

গঙ্গার (হুগলি নদী) এক দিকে ব্যারাকপুর, অন্য দিকে হুগলি শিল্পাঞ্চল। এক দিকে বীজপুর থেকে বরাহনগর, অন্য দিকে উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়া— একের পর এক ঘাট থেকে ভুটভুটি বা লঞ্চে করে চলে যাত্রী পারাপার। শুক্রবার সকালের ছবিই বলছে, বহু ঘাটেই এখন লাইফ জ্যাকেটের বালাই নেই। ফলে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট যেমন দেওয়া হয়নি, তেমনই যাত্রীদের কেউও নিজে থেকে তা চেয়ে নেননি।

২০১৭ সালের এপ্রিলে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় বাঁশের অস্থায়ী জেটি ভেঙে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যু হয় ২০ জনের। ঠিক তার পরেই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে ইছাপুরে। তারও আগে নদিয়ার শান্তিপুর-কালনা ঘাটের মাঝে গঙ্গায় নৌকা ডুবে মৃত্যু হয় ২২ জনের। তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনার পরে নির্দেশ জারি করা হয়, নৌকার সব যাত্রীকে লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। সব ঘাটে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট রাখতে হবে। প্রতিটি ঘাটে মাইকে ঘোষণার ব্যবস্থা (পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম) চালু করতে হবে।

প্রথমে সব কিছু ঠিক থাকলেও ধীরে ধীরে সব নির্দেশিকা পালনে শিথিলতা দেখা যায়। আর এখন তা পুরোপুরি উধাও। হাওড়ায় নৌকাডুবিতে মৃত্যুর ঘটনায় সেই উদাসীনতাই প্রকাশ হল। শুক্রবার উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়া বা বরাহনগর থেকে হালিশহর— কোনও ঘাটেই যাত্রী নিরাপত্তার এই প্রাথমিক শর্ত মানতে দেখা গেল না। কেন এই পরিস্থিতি?

এই বিষয়ে তেলেনিপাড়ার পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনীহা ছিলই, করোনার আতঙ্কে লাইফ জ্যাকেট পরা বন্ধ হয়ে গেল। এখন আর কেউ পরতে চান না।’’ গঙ্গার তীরের উত্তর ব্যারাকপুর পুর এলাকায় দু’টি বড় ফেরিঘাট সংস্কারের পরে লাইফ জ্যাকেট মজুত করা হয়েছিল সাম্প্রতিক কালেই। কিন্তু উত্তর ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান মলয় ঘোষের খেদ, ‘‘ঘোষণা করেও লাইফ জ্যাকেট পরানো যায় না। কত ক্ষণে ঘাট পার হবেন, সেই তাড়া থাকে। অন্যের ব্যবহৃত দোহাই দিয়েও অনেকে পরতে চান না।’’

ব্যারাকপুরের ধোবিঘাট, হুগলির শেওড়াফুলি ঘাট, পানিহাটি ঘাট বা চন্দননগর রানিঘাটের চিত্রও একই। অধিকাংশ ঘাটেই ভাসমান জেটি নতুন তৈরি হয়েছে। জেনারেটর বসানো ভুটভুটির বদলে ভেসেলে পারাপার হয়। আলোর ব্যবস্থাও হয়েছে। কিন্তু জলপথের নিরাপত্তায় খামতি আছেই, মানছেন জগদ্দল ঘাটের এক কর্মী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Life Jackets Boats Safety
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE