E-Paper

খেলা চালাতে সরকারি সুবিধা চান ভলিবলে সেরা ‘কন্যাশ্রী’রা

বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে ওই প্রতিযোগিতা শুরু হয় ৩৫টি দলকে নিয়ে। বাংলা দলে হুগলির আট এবং বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনার দু’জন করে খেলোয়াড় ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৪
জাতীয় স্কুল ভলিতে চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দল।

জাতীয় স্কুল ভলিতে চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দল। নিজস্ব চিত্র ।

ভলিবলে ফের সাফল্য বাংলার মেয়েদের।

দু’দিন আগে ৬৯তম জাতীয় স্কুল ভলিবলে খেতাব জিতেছে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৭ মেয়েরা। তার পরে অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগেও সেরার মুকুট বাংলার ছাত্রীদের মাথায়। মধ্যপ্রদেশের গাদারওয়াড়া নরসিংহপুরে ওই প্রতিযোগিতায় তাঁরা সোমবার গত বারের চ্যাম্পিয়ন তামিলনাড়ুকে হারিয়ে দেন। ভলিবলের কোর্টে বঙ্গতনয়াদের আধিপত্যে খুশির হাওয়া রাজ্যের স্কুলক্রীড়ার আঙিনায়। ভলিবলারদের অনেকেই অভাবকে হারিয়ে এই জায়গায় উঠে এসেছেন।

জাতীয় স্কুল ভলিবলে ২০১৯, ’২২ এবং ’২৩ সালে পরপর তিন বার (২০২০ এবং ’২১ সালে প্রতিযোগিতা হয়নি করোনার জন্য) সেরা হয় বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ ছাত্রীদের দল। এক বছর পরে ফের তারা শীর্ষে।

গত বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে ওই প্রতিযোগিতা শুরু হয় ৩৫টি দলকে নিয়ে। বাংলা দলে হুগলির আট এবং বর্ধমান ও উত্তর ২৪ পরগনার দু’জন করে খেলোয়াড় ছিলেন। লিগে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে নকআউট পর্বে পৌঁছে প্রি-কোয়ার্টারে উত্তরপ্রদেশকে, কোয়ার্টার ফাইনালে কর্নাটককে হারায় বাংলা। সেমিফাইনালে হারায় সিবিএসসি-কে। সোমবার ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন তামিলনাড়ুকে দাঁড়াতেই দেননি বাংলার কন্যাশ্রীরা। জয় স্ট্রেট সেটে (২৫-২০, ২৫-১৫, ২৫-১৮)। গত বছর তামিলনাড়ুর কাছে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলেন বঙ্গকন্যারা।

নজর কেড়েছেন হুগলির তানিশা রায়, সুস্মিতা পাল, রাজশ্রী মিত্র, সুমনা পাল, পূর্ব বর্ধমানের অঙ্কিতা দাসেরা। অধিনায়কত্ব করেন তানিশা। অন্য সতীর্থেরা হলেন পূর্ব বর্ধমানের অদ্রিজা চক্রবর্তী, উত্তর ২৪ পরগনার বিদিশা কুণ্ডু, বনানী দাস, হুগলির বৃষ্টি পাত্র, স্মৃতি মাইতি, স্নেহা শর্মা, নেহা ঘোষ। কোচ ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কিশোর মালাকার এবং হুগলির শুভঙ্কর চক্রবর্তী। ম্যানেজার পুরুলিয়ার হরেকৃষ্ণ দাস ও নদিয়ার চৈতালি সরকার।

খেলোয়াড়দের কারও বাবা শ্রমিক, কেউ গাড়ি বা টোটো চালান। কেউ দোকানের কর্মচারী। কারও সংসার চলে সেলুন চালিয়ে। মেয়েদের লক্ষ্য, খেলায় আরও নাম করা, দেশের হয়ে খেলা। তবে, তাঁরা জানেন, অসচ্ছল পরিবারে খেলা চালানো কঠিন। তাই বৃত্তি এবং চাকরির আর্জি জানাতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

জয়ী দলের একাধিক সদস্য চান, সন্তোষ ট্রফি জয়ী ফুটবলারদের মতো রাজ্য সরকার তাঁদেরও চাকরির নিশ্চয়তা দিক। তারকেশ্বরের মেয়ে তানিশা বলেন, ‘‘চাকরির নিশ্চয়তা থাকলে আরও খোলামনে খেলতে পারবে সবাই।’’ দ্বাদশ শ্রেণির অঙ্কিতার বিষয় হিসাবে শারীরশিক্ষা রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার খেলার নম্বর শারীরশিক্ষায় যোগ হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সকলের ক্ষেত্রেই এই সুযোগ থাকা উচিত। অনুশীলনের জন্য রোজ পাঁচ ঘণ্টা সময় যায়। প্রতিযোগিতাও থাকে। পড়াশোনার সুযোগ কম থাকে। মার্কশিটে নম্বর যোগ হলে খেলায় আরও মনোনিবেশ করা যায়।’’

চ্যাম্পিয়ন দলকে এক্স হ্যান্ডলে অভিনন্দন জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাদের হার না মানা মনোভাব এবং মানসিকতাকে তিনি ‘স্যালুট’ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ‘কন্যাশ্রী’র হাত ধরে বাংলার মেয়েরা সারা ভারতে বাংলাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছেন। এই সোনা জয় তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ভলিবলে দেশের সেরা কন্যাশ্রীরা চান, আরও বিকশিত হতে প্রয়োজনীয় সরকারি সুবিধা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Serampore Volleyball

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy