প্রতীকী চিত্র
কচি দু’টো হাতে শাঁখা। কপালে সিঁদুর।
মেয়েটাকে দেখেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের। নথিপত্র নেড়েচেড়ে দেখা গেল, বয়স তার ১২ বছর ৭ মাস। এই বয়সেই সে দিব্যি সংসার করতে লেগে পড়েছিল। ওই বালিকা যাতে পাকাপাকি ভাবে বাপের বাড়িতেই থাকে, পত্রপাঠ সেই ব্যবস্থা নিল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার হুগলির চণ্ডীতলা-২ ব্লকের জনাইয়ের ঘটনা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। বাবার সেলুন রয়েছে। গত ১৭ মে লকডাউনের মধ্যেই স্থানীয় বাক্সা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। পালিয়ে বিয়ে। মেয়েটির মতোই ছেলেটিরও বিয়ের বয়স হয়নি। তাঁর বয়স ২০ বছর। তিনি ছোটখাটো কাজ করেন। তাঁর বাবা পেশায় গাড়ি-চালক।
ব্লক প্রশাসনের কাছে বৃহস্পতিবার ওই বিয়ের খবর আসে। এর পরেই বিকেলে ব্লক ওয়েলফেয়ার অফিসার (বিডব্লিও) বিপ্লবকুমার বিশ্বাস এবং চণ্ডীতলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা মেয়েটির বাপের বাড়িতে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে মেয়েটি আসে। শাঁখা-সিঁদুর থাকায় কেউ বিয়ের কথা অস্বীকারের সুযোগ পাননি।
প্রশাসনের তরফে তার বাড়ির লোককে বোঝানো হয়, আঠেরো বছরের আগে একটি মেয়ের শারীরিক এবং মানসিক গঠন সম্পূর্ণ হয় না। সেই কারণে নাবালিকা বিয়ের উপযুক্ত হয়ে ওঠে না। বরং এখন তার পড়াশোনা করার সময়। সে ক্ষেত্রে সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে। সরকারি নানা প্রকল্পের সাহায্যও মিলবে। মেয়েটিকেও আলাদা করে বোঝানো হয়।
অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, মেয়েটি বাপের বাড়িতেই থাকবে। সাবালিকা না-হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হবে না, এই মর্মে মুচলেকাও দেন তার বাপের বাড়ির লোক। প্রশাসনের তরফে ছেলের বাড়ির লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। একই বিষয় তাঁদেরও বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, ওই নির্দেশ পালন করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজর রাখা হবে। ফের এমন কিছু ঘটলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy