Advertisement
E-Paper

‘মৃত’ কাকা ঘুরছেন হাসপাতালে!

হাসপাতালের নীচে প্রস্তুত শববাহী গাড়ি। সঙ্গে ফুলের মালা, রজনীগন্ধার স্টিক, ধূপ নিয়ে চলে এসেছেন আত্মীয়েরাও। হাসপাতালও ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে তৈরি। কিন্তু হাসপাতালের নির্দিষ্ট শয্যার সামনে গিয়ে হতবাক সকলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০২:২২
জয়নারায়ণ পাণ্ডে। —নিজস্ব চিত্র।

জয়নারায়ণ পাণ্ডে। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালের নীচে প্রস্তুত শববাহী গাড়ি। সঙ্গে ফুলের মালা, রজনীগন্ধার স্টিক, ধূপ নিয়ে চলে এসেছেন আত্মীয়েরাও। হাসপাতালও ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে তৈরি। কিন্তু হাসপাতালের নির্দিষ্ট শয্যার সামনে গিয়ে হতবাক সকলে।

যাঁর মৃতদেহ নিতে এসেছেন তিনি কোথায়? সেখানে যে মৃতদেহটি শোয়ানো, তিনি ওই শয্যায় ভর্তিই ছিলেন না। অথচ ডেথ সার্টিফিকেট লেখা হয়েছে শয্যার মালিকের নামে। মৃতদেহ শয্যায় দেখে ফোনও গিয়েছে বাড়িতে। কিন্তু যাঁর শয্যায় ওই মৃতদেহ রয়েছে, তিনি কোথায়?

ফুল-টুল ফেলে পাগল পাগল অবস্থা সেই রোগীর আত্মীয়দের। বেশ কিছুক্ষণ দৌড়োদৌড়ির পরে অবশেষে কাজগকলমে ‘মৃত’ ওই রোগীর দেখা মিলল হাসপাতালের নীচে। একেবারে সুস্থ তিনি! বুধবার এই ঘটনাটি ঘটেছে হা‌ওড়া জেলা হাসপাতালে। কী ভাবে এমন ভুল হল হাসপাতালের?

সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ৭২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন মধুসূদন পালচৌধুরী লেনের বাসিন্দা পঞ্চান্ন বছরের জয়নারায়ণ পাণ্ডে। মঙ্গলবারই তাঁর ছুটি হয়ে গিয়েছিল। তাঁর শয্যার নীচে মেঝেতে ভর্তি ছিলেন আর এক জন। তাঁর নম্বর ছিল এক্সট্রা-১৬। রাতে জয়নারায়ণবাবু ওই এক্সট্রা ১৬-র রোগীকে তাঁর বিছানায় শুতে দেন। নিজে শুয়ে পড়েন মেঝেতে।

হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়, এ দিন সকাল থেকে বাড়ি যাবেন বলে ভাইপোর জন্য অপেক্ষা করতে করতে এক সময়ে উঠে পড়েন জয়নারায়ণবাবু। হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। এর মধ্যেই ওই এক্সট্রা-১৬ নম্বর রোগীর মৃত্যু হয়।

সুপার বলেন, ‘‘এখান থেকেই বিপত্তির শুরু বলে মনে হচ্ছে। ওই মৃত ব্যক্তিকেই জয়নারায়ণবাবু ভেবে চিকিৎসক ও নার্সেরা পুলিশকে মৃত রোগীর বাড়িতে খবর দিতে বলেন। এই ঘটনার অবশ্যই তদন্ত হবে।’’

গত ১৬ তারিখ শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন জয়নরায়ণবাবু। অকৃতদার ওই ব্যক্তির দেখাশোনা করেন তাঁর ভাইপো বৈদ্যনাথ পাণ্ডে। বুধবার হাসপাতাল থেকে ব্যাঁটরা থানাকে জানানো হয় জয়নারায়ণবাবু মারা গিয়েছেন।

বৈদ্যনাথবাবু বলেন, ‘‘কয়েক বার থানার ফোন আসার পরে সাদা পোশাকের পুলিশ বাড়ি এসে কাকার মৃত্যু সংবাদ দেয়।’’ এতে তাঁরা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যান, তাঁদের কাকা মারা গিয়েছেন। এর পরেই তাঁরা আত্মীয়দের খবর দেন। শববাহী গাড়ি, ফুলের মালা, রজনীগন্ধার স্টিক-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে হাসপাতালে পৌঁছন। তখনই জানা যায় সত্যটা।

বৈদ্যনাথবাবু বলেন, ‘‘কাকাকে খুঁজে পেয়ে আমরা মেল মেডিসিন বিভাগে গিয়ে ওই খবর কর্তব্যরত নার্সকে দিই। আমাদের সামনেই তিনি বলেন, বড় ভূল হয়ে গিয়েছে। আসলে আগেই আমরা ওঁর ডিসচার্জ লিখে দিয়েছিলাম।’’

জীবিত মানুষকে মৃত বলে ঘোযণা করার খবর রটতে হাসপাতাল চত্বরে ছড়ায় উত্তেজনা। জয়নারায়ণবাবুর আত্মীয়-বন্ধুরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী ছুটে আসে। শেষে বিক্ষোভকারীরা থানায় গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

Hospital negligence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy