Advertisement
E-Paper

বিজেপি নেতা খুনে মূল অভিযুক্ত অধরা

খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহত সুদর্শনের মা নূপুরদেবী এবং স্ত্রী মামণি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০১:১৪
ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া সাঁকোর একটি অংশ। —নিজস্ব চিত্র

ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া সাঁকোর একটি অংশ। —নিজস্ব চিত্র

পেরিয়ে গিয়েছে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময়। সোমবার বিকেল পর্যন্ত খানাকুলের সাজুরহাটের বিজেপি নেতা সুদর্শন পরামাণিকের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে ধরতে পারল না পুলিশ। ধরা পড়েনি বাকি ১১ অভিযুক্তও। সাজুরহাট এবং আশপাশের গ্রামগুলি এ দিনও ছিল থমথমে। পুলিশের টহলদারি চলে। ধরপাকড় এবং হামলার আশঙ্কায় বিজেপি ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া।

ময়নাতদন্তের পরে রবিবার রাতে নিহত নেতার দেহ তাঁর গ্রাম নতিবপুরে ফিরলে তৃণমূল কর্মীদের ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি অভিযোগ মানেনি। ভাঙচুরে জড়িত অভিযোগে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করে।

খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহত সুদর্শনের মা নূপুরদেবী এবং স্ত্রী মামণি। নূপুরদেবী বলেন, “পুলিশ চাইলেই ধরতে পারে অপরাধীদের। আমরা চাই ছেলের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে পুলিশ চরম সাজার ব্যবস্থা করুক।’’ রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীও এ দিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে গিয়ে সুদর্শন খুন নিয়ে অভিযোগ জানান। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষও বলেন, “মূল অভিযুক্ত-সহ সমস্ত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি করেছি আমরা। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”

এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজে জোর তল্লাশি চলছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট চলছে। শনিবার সকালে সাজুরঘাটে জাতীয় পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে সুদর্শনকে কুপিয়ে-পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিহতের পরিবারের পক্ষে তৃণমূল নেতা কলিমুদ্দিন মল্লিক-সহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। রাতেই অভিযুক্ত ছ’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তৃণমূল খুনের অভিযোগ মানেনি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে সুদর্শন খুন হন বলে তৃণমূলের দাবি।

এ দিকে, শনিবার খুনের পরে সাজুরঘাট ফেরিঘাটের কাঠের সাঁকোয় অগ্নিসংযোগের জেরে গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খানাকুল-২ ব্লক এলাকা থেকে ওই সাঁকো পেরিয়ে মুচিঘাটা হয়ে সহজে হাওড়া বা কলকাতা যাওয়া যেত। এখন অনেকটা ঘুরপথে যেতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। ব্লক প্রশাসনের কাছে তাঁরা অবিলম্বে সাঁকোটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

বিজেপিই ওই সাঁকোতে আগুন লাগায় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তা অস্বীকার করে বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, সাজুরঘাট ফেরিঘাটই ছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের আস্তানা। ওখানেই দলীয় নেতাকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়। তাই খুনের ঘটনার পর জনরোষেই সেই আস্তানা পুড়েছে বলে বিজেপির দাবি।

খুনে অভিযুক্ত ১৮ জনের মধ্যে অধিকাংশের নামেই ওই ফেরিঘাটকে কেন্দ্র করে মদ খেয়ে মারপিট, জুয়া খেলা, মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ-সহ নানা অভিযোগ আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আগে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

বিডিও দেবল উপাধ্যায় বলেন, “ফেরিঘাটটি শাবলসিংহপুর পঞ্চায়েতের অধীন আছে। তারাই ইজারা দেয়। প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছি, সেতু পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশে এফআইএর দায়ের করে অবিলম্বে তা সংস্কারের ব্যবস্থা করতে।” তৃণমূল পরিচালিত শাবলসিংহপুর পঞ্চায়েতের প্রধান ইকবাল হোসেন খান বলেন, “বিষয়টা নিয়ে ইজারাদারের সঙ্গে কথা বলছি।”

ওই পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, খাতায়-কলমে ফেরিঘাটটির ইজারাদার এলাকার তৃণমূল নেতা রহমত সুভানি ওরফে কাজল। তিনি ঘাটটি চালাতে ইজারা দিয়েছেন হরিশচক গ্রামের মিঠু মহাজন নামে আর এক দলীয় নেতাকে। এই মিঠু বিজেপি নেতাকে খুনে অন্যতম অভিযুক্ত। তিনি পলাতক।

সাঁকো সংস্কারের প্রশ্নে কাজল বলেন, ‘‘সাঁকোর ছোটখাটো ক্ষয়ক্ষতি আমরাই মেরামত করি। কিন্তু পুড়িয়ে দেওয়ার পর তা সংস্কার করা ব্যয়সাপেক্ষ। তা পঞ্চায়েতকেই করতে হবে।’’

BJP Murder Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy